সাময়িক প্রসঙ্গ
দাব্বাতুল আরয্ প্রসঙ্গ
শাইখ আব্দুল্লাহ শাহেদ মাদানী
আখেরী যামানায় ক্বিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে যমীন থেকে দাব্বাতুল আরয্ নামক এক অদ্ভূত জন্তু বের হবে। জন্তুটি মানুষের সাথে কথা বলবে। এটি হবে ক্বিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার অন্যতম সর্বশেষ ভয়াবহ আলামত। পশ্চিম আকাশে সূর্য উদিত হওয়ার পর তাওবার দরজা বন্ধ হয়ে গেলে এটি বের হবে। সহীহ হাদীস থেকে জানা যায় যে, পশ্চিম আকাশে সূর্য উঠার কিছুক্ষণ পরই যমীন থেকে এই অদ্ভূত জানোয়ারটি বের হবে। তাওবার দরজা যে একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে- এ কথাটিকে চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করার জন্য সে মু’মিনদেরকে কাফির থেকে নির্দিষ্ট চিহ্নের মাধ্যমে আলাদা করে ফেলবে। মু’মিনের কপালে লিখে দিবে ‘মু’মিন’ এবং কাফিরের কপালে লিখে দিবে ‘কাফির’।
এ ব্যাপারে কুরআন থেকে যা জানা যায় : কুরআন মাজীদের সূরা আন্ নাম্লের ৮২ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَإِذَا وَقَعَ الْقَوْلُ عَلَيْهِمْ أَخْرَجْنَا لَهُمْ دَابَّةً مِنْ الْأَرْضِ تُكَلِّمُهُمْ أَنَّ النَّاسَ كَانُوْا بِآيَاتِنَا لَا يُوْقِنُوْنَ)
“যখন প্রতিশ্রুতি (ক্বিয়ামত) নিকটবর্তী হবে তখন আমি তাদের সামনে ভূগর্ভ থেকে একটি প্রাণী নির্গত করবো। সে মানুষের সাথে কথা বলবে, এ বিষয়ে যে, মানুষ আমার নিদর্শনসমূহে বিশ্বাস করতো না।”
ইবনু কাসীর (রাহিমাহুল্লা-হ) বলেন : আখেরী যামানায় মানুষ যখন নানা পাপাচারে লিপ্ত হবে, মহান আল্লাহর আদেশ পালন বর্জন করবে এবং দীনকে পরিবর্তন করবে তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের সামনে এই জন্তুটি বের করবেন।”১
ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্ হু) বলেন, “জন্তুটি মানুষের মতই কথা বলবে।”২
প্রাণীটির কাজ কী হবে এবং কী বিষয়ে মানুষের সাথে কথা বলবে- এ ব্যাপারে আল্লামা আলূসী বলেন, আয়াতে উল্লেখিত কুরআনের বাণীটিই হবে তার কথা। অর্থাৎ- (أَنَّ النَّاسَ كَانُوْا بِآيَاتِنَا لَا يُوْقِنُوْنَ) এই বাক্যটি সে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষকে শুনাবে। মর্ম এই যে, আজকের পূর্বে অনেক মানুষই মহান আল্লাহর আয়াত ও নিদর্শনসমূহে বিশ্বাস করেনি। বিশেষ করে ক্বিয়ামতের আলামত এবং তা সংঘটিত হওয়ার বিষয়ে। এমনকি আমার আগমনের বিষয়েও অনেক মানুষ বিশ্বাস করতো না। এখন সে সময় এসে গেছে এবং আমিও বের হয়ে এসেছি।
দাব্বাতুল আরয্ সম্পর্কে হাদীস থেকে যা অবগত হওয়া যায় :
১) সহীহ মুসলিমে হুযাইফাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্ হু) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন :
اطَّلَعَ النَّبِيُّ ﷺ عَلَيْنَا وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ فَقَالَ مَا تَذَاكَرُوْنَ قَالُوْا نَذْكُرُ السَّاعَةَ قَالَ إِنَّهَا لَنْ تَقُوْمَ حَتّٰى تَرَوْنَ قَبْلَهَا عَشْرَ آيَاتٍ فَذَكَرَ الدُّخَانَ وَالدَّجَّالَ وَالدَّابَّةَ وَطُلُوْعَ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا وَنُزُوْلَ عِيْسَى ابْنِ مَرْيَمَ ﷺ وَيَأَجُوْجَ وَمَأْجُوْجَ وَثَلَاثَةَ خُسُوْفٍ خَسْفٌ بِالْمَشْرِقِ وَخَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ وَخَسْفٌ بِجَزِيْرَةِ الْعَرَبِ وَآخِرُ ذٰلِكَ نَارٌ تَخْرُجُ مِنَ الْيَمَنِ تَطْرُدُ النَّاسَ إِلَى مَحْشَرِهِمْ.
“একদা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের নিকট আগমন করলেন। আমরা তখন ক্বিয়ামতের আলামত সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেন, যতদিন তোমরা দশটি আলামত না দেখবে ততদিন ক্বিয়ামত হবে না। (১) ধোঁয়া, (২) দাজ্জালের আগমন, (৩) ভূগর্ভ থেকে নির্গত দাব্বাতুল আরয্ নামক অদ্ভূত এক জানোয়ারের উত্থান, (৪) পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়, (৫) ‘ঈসা ইবনু মারইয়ামের আগমন, (৬) ইয়াজুয-মা‘জুযের আবির্ভাব, (৭) পূর্বে ভূমিধ্বস, (৮) পশ্চিমে ভূমিধ্বস, (৯) আরব উপদ্বীপে ভূমিধ্বস, (১০) সর্বশেষে ইয়ামান থেকে একটি আগুন বের হয়ে মানুষকে সিরিয়ার দিকে হাঁকিয়ে নিবে।”৩
২) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন :
تَخْرُجُ الدَّابَّةُ فَتَسِمُ النَّاسَ عَلٰى خَرَاطِيْمِهِمْ ثُمَّ يَغْمُرُوْنَ فِيْكُمْ حَتّٰى يَشْتَرِيَ الرَّجُلُ الْبَعِيْرَ فَيَقُوْلُ مِمَّنِ اشْتَرَيْتَهُ فَيَقُوْلُ اشْتَرَيْتُهُ مِنْ أَحَدِ الْمُخَطَّمِيْنَ.
“দাব্বাতুল আরয্ নামক একটি প্রাণী বের হবে এবং মানুষের নাকে চিহ্ন দিবে। অতঃপর মানুষেরা পৃথিবীতে জীবন-যাপন করবে। প্রাণীটি সকল মানুষের নাকেই দাগ লাগিয়ে দিবে। এমনকি উট ক্রয়কারীকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় তুমি এটি কার কাছ থেকে ক্রয় করেছো? সে বলবে, আমি এটি নাকে দাগওয়ালা একজন ব্যক্তির নিকট থেকে ক্রয় করেছি।”৪
৩) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেন :
تَخْرُجُ الدَّابَّةُ مَعَهَا عَصَا مُوْسٰى وَخَاتَمُ سُلَيْمَانَ فَتَجْلُوْ وَجْهَ الْمُؤْمِنِ بِالْعَصَا وَتَخْتِمُ أَنْفَ الْكَافِرِ بِالْخَاتَمِ حَتّٰى إِنَّ أَهْلَ الْخِوَانِ لَيَجْتَمِعُوْنَ فَيَقُوْلُ هَذَا يَا مُؤْمِنُ وَيَقُوْلُ هَذَا يَا كَافِرُ.
“দাব্বাতুল আরয্ বের হবে। তার সাথে থাকবে মূসা (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর লাঠি এবং সুলায়মান (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর আংটি। কাফিরের নাকে সুলায়মান (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর আংটি দিয়ে দাগ লাগাবে এবং মূসা (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর লাঠি দিয়ে মু’মিনের চেহারাকে উজ্জ্বল করে দিবে। লোকেরা খানার টেবিল ও দস্তরখানায় বসেও একে অপরকে বলবে, হে মু’মিন! হে কাফির!”৫
প্রাণীটির ধরণ কেমন হবে?
প্রাণীটি হবে মানব জাতির কাছে পরিচিত চতুষ্পদ জন্তুসমূহের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। সেটি মানুষের সাথে কথা বলবে। প্রাণীটি কোন শ্রেণীর হবে- এ নিয়ে ‘আলেমগণ মতভেদ করেছেন।
১) ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লা-হ) বলেন, এটি হবে সালেহ (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর উটনীর বাছুর। যখন কাফিরেরা উটনীকে হত্যা করে ফেলল তখন বাছুরটি পাথরের মাঝে ঢুকে পড়েছিল। এটি আল্লাহ তা‘আলার অনুমতিক্রমে ক্বিয়ামতের পূর্বে বের হয়ে আসবে। ইমাম কুরতুবী বলেন, এটিই বিশুদ্ধ মত।
তাঁর এ কথা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ তিনি যে হাদীস দিয়ে দলীল গ্রহণ করেছেন তার সনদে এমন একজন রাবী (বর্ণনাকারী) আছেন যার বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়।
২) কেউ কেউ বলেছেন, এটি হবে দাজ্জালের হাদীসে বর্ণিত জাস্সাসা (গোয়েন্দা)। এ মতটিও গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ দাজ্জালের হাদীসে যে প্রাণীটির কথা এসেছে তার নাম জাস্সাসা। আর ক্বিয়ামতের পূর্বে যে প্রাণীটি বের হবে তার নাম দাব্বাতুল আরয্ যা কুরআনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
৩) কেউ কেউ বলেছেন, এটি হলো সেই সাপ যা কা‘বার দেয়ালে ছিল। কুরাইশরা যখন কা‘বা ঘর নির্মাণ করার ইচ্ছা পোষাণ করল তখন সাপটিই তাদের নির্মাণ কাজ শুরু করতে মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। একটি পাখি এসে সাপটিকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেলে নির্মাণ কাজের বাধা দূর হয়ে যায়। কিন্তু এ কথার পক্ষেও কোন দলীল নেই। এমনি আরো অনেক কথা বর্ণিত আছে। এগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ কোন একটি মতের স্বপক্ষে সহীহ কোন দলীল পাওয়া যায় না।
শাইখ আহমাদ শাকের মুসনাদে আহমাদের ব্যাখ্যায় বলেন, “কুরআনের আয়াতে সুস্পষ্ট আরবী ভাষায় বলা আছে এটি হলো দাব্বাতুল আরয্। দাব্বা অর্থ অত্যন্ত সুস্পষ্ট। কোন প্রকার ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই; বরং আমরা বিশ্বাস করি আখেরী যামানায় একটি অদ্ভূত ধরনের জন্তু বের হবে। সে মানুষের সাথে কথা বলবে। কুরআন ও সহীহ হাদীসে তাঁর গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট বর্ণিত হয়েছে। আমরা তাতে বিশ্বাস করি।”
পৃথিবীর কোন্ জায়গা থেকে প্রাণীটি বের হবে?
১) এটি বের হবে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে সম্মানিত মাসজিদ থেকে। ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্ হু) বলেন, “সাফা পাহাড় ফেটে প্রাণীটি বের হবে। তিনি বলেন, আমি যদি চাইতাম তাহলে যে স্থানটি থেকে বের হবে তাতে পা রেখে দেখাতে পারতাম।”৬
২) জন্তুটি তিনবার বের হবে। প্রথমে বের হবে কা‘বা হতে দূরবর্তী একটি গ্রাম থেকে। অতঃপর কিছুদিন লুকিয়ে থাকার পর আবার বের হবে। পরিশেষে কা‘বা ঘর থেকে বের হবে।
এ ব্যাপারে আরো কথা বর্ণিত আছে। সব মিলিয়ে আমরা বলবো, মক্কা থেকে দাব্বাতুল আরয্ বের হবে। অতঃপর সমগ্র পৃথিবীতে ভ্রমণ করবে।
প্রাণীটির কাজ কী হবে?
১) প্রাণীটি মানুষের সাথে কথা বলবে। প্রাণীটি কি বিষয়ে মানুষের সাথে কথা বলবে- এ ব্যাপারে আল্লামা আলূসী বলেন, আয়াতে উল্লেখিত কুরআনের বাণীটিই হবে তার কথা।
অর্থাৎ- (أَنَّ النَّاسَ كَانُوْا بِآيَاتِنَا لَا يُوْقِنُوْنَ) এই বাক্যটি সে আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষকে শুনাবে। মর্ম এই যে, আজকের পূর্বে অনেক মানুষই মহান আল্লাহর আয়াত ও নিদর্শনসমূহে বিশ্বাস করেনি। বিশেষ করে ক্বিয়ামতের আলামত ও তা আগমনের বিষয়ে। এমনকি আমার আগমনের বিষয়েও অনেক মানুষ বিশ্বাস করতো না। এখন সে সময় এসে গেছে এবং আমিও বের হয়ে এসেছি।
২) সে মু’মিনদেরকে কাফির থেকে নির্দিষ্ট চিহ্নের মাধ্যমে আলাদা করে ফেলবে। মু’মিনের কপালে লিখে দিবে ‘মু’মিন’ এবং কাফিরের কপালে লিখে দিবে ‘কাফির’। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন :
تَخْرُجُ الدَّابَّةُ فَتَسِمُ النَّاسَ عَلٰى خَرَاطِيْمِهِمْ ثُمَّ يَغْمُرُوْنَ فِيْكُمْ حَتّٰى يَشْتَرِيَ الرَّجُلُ الْبَعِيْرَ فَيَقُوْلُ مِمَّنِ اشْتَرَيْتَهُ فَيَقُوْلُ اشْتَرَيْتُهُ مِنْ أَحَدِ الْمُخَطَّمِيْنَ.
“দাব্বাতুল আরয্ বের হবে এবং মানুষের নাকে চিহ্ন দিবে। অতঃপর মানুষেরা পৃথিবীতে জীবন-যাপন করবে। প্রাণীটি সকল মানুষের নাকেই দাগ লাগিয়ে দিবে। এমনকি উট ক্রয়কারীকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় তুমি এটি কার কাছ থেকে ক্রয় করেছো? সে বলবে, আমি এটি নাকে দাগওয়ালা একজন ব্যক্তির নিকট থেকে কিনেছি।”৭
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেন :
تَخْرُجُ الدَّابَّةُ مَعَهَا عَصَا مُوْسٰى وَخَاتَمُ سُلَيْمَانَ فَتَجْلُوْ وَجْهَ الْمُؤْمِنِ بِالْعَصَا وَتَخْتِمُ أَنْفَ الْكَافِرِ بِالْخَاتَمِ حَتّٰى إِنَّ أَهْلَ الْخِوَانِ لَيَجْتَمِعُوْنَ فَيَقُوْلُ هَذَا يَا مُؤْمِنُ وَيَقُوْلُ هَذَا يَا كَافِرُ.
“দাব্বাতুল আরয্ বের হবে। তার সাথে থাকবে মূসা (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর লাঠি এবং সুলায়মান (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর আংটি। কাফিরের নাকে সুলায়মান (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর আংটি দিয়ে দাগ লাগিয়ে দিবে এবং মূসা (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর লাঠি দিয়ে মু’মিনের চেহারাকে উজ্জ্বল করে দিবে। এমনকি লোকেরা খানার টেবিলে (দস্তরখানায়) বসেও একে অপরকে বলবে, হে মু’মিন! হে কাফির!”৮

১. তাফসীরে ইবনু কাসীর- ৩/৩৫১।
২. পূর্বোক্ত উৎস।
৩.  হাঃ ৩৯/২৯০১।
৪. মুসনাদে আহমাদ। সিলসিলায়ে সহীহাহ্- হাঃ ৩২২।
৫. মুসনাদে আহমাদ। আহমাদ শাকের সহীহ বলেছেন, ৭৯২৪।
৬. তাফসীরে কুরতুবী- ১৩/ ২৬৩, তাবারানী ফিল আওসাত- ২/১৭৬।
৭. মুসনাদে আহমাদ। সিলসিলায়ে সহীহাহ্- হাঃ ৩২২।
৮. মুসনাদে ইমাম আহমাদ, আহমাদ শাকের বলেন, হাদীসের সনদ সহীহ, হাঃ ৭৯২৪।


আপনার মন্তব্য

ঢাকায় সূর্যোদয় : 6:17:45 সূর্যাস্ত : 5:11:51

সাপ্তাহিক আরাফাতকে অনুসরণ করুন

@সাপ্তাহিক আরাফাত