সাময়িক প্রসঙ্গ
ডারউইন-এর বিবর্তনবাদ একটি ফ্লপ থিওরী
প্রকৌশলী মুহাম্মদ ইবরাহীম

জঘঅ, উঘঅ লব্দ জ্ঞান থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা বংশের গতিধারা রক্ষা করে। এ জন্য নিম গাছে নিম ও আম গাছে আমই ফলে। কখনও বানরের উঘঅ মনুষ্য উঘঅ-এর সাথে মিলবে না। তা সত্ত্বেও ইউনিভার্সিটিতে অহঃযৎড়ঢ়ড়ষড়মু কেন পড়ানো হয় তা আমাদের বোধশক্তির বাইরে।

পৃথিবীতে মানুষের উৎপত্তি ও বিকাশ সম্পর্কে বিভিন্ন মতবাদ প্রচলিত আছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অগ্রহণযোগ্য এবং বিজ্ঞানবহির্ভূত মতবাদ হচ্ছে চার্লস ডারউইনের ‘মানব বিবর্তনবাদ’ তত্ত্বটি। এতে তিনি (ডারউইন) বলেছেন, প্রতিটি জীব বিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বলে বর্তমানে আধুনিক মানব প্রজাতি বিবর্তনের আওতাভুক্ত এবং আদি চৎরসধঃব-এর একটি শাখার উন্নত সংস্করণই বর্তমান সুন্দর মানব। বহুকোষী কার্ডাটা (ঈযড়ৎফধঃধ) পর্বের মেরুদ-ী ও স্তন্যপায়ী চার পা বিশিষ্ট বানর, গরিলা, শিম্পাঞ্জি এবং মানুষ প্রাইমেট-এর অন্তর্ভুক্ত। আদি প্রাইমেট-এর বিবর্তনের বিভিন্ন শাখায় কেউ হয়েছে বানর, কেউ হয়েছে গরিলা, কেউ শিম্পাঞ্জি এবং সর্বাধিক বিবর্তনের সহায়ক প্রজাতির একটি শাখা মানুষে পরিণত হয়েছে।

ডারউইনের উক্ত মতবাদটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার সামনে টিকছে না বিধায় ঊনবিংশ শতাব্দির বিজ্ঞানীরা তা বাতিল করে দিয়েছেন। শুধুমাত্র কিছু নাস্তিক বিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবী এ তত্ত্বটি একশ ভাগ সত্য মেনে নিয়ে তাদের লিখিত বইপত্রে উদ্ধৃত করে থাকে।

বাস্তববাদী বিজ্ঞানীরা ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্বের অবাস্তবতা প্রমাণ করতে গিয়ে যুক্তি প্রদর্শন করেছেন, যদি বানর কিংবা শিম্পাঞ্জির বিবর্তনের ফলে মানুষ সৃষ্টি হয়ে থাকে তাহলে মানুষের বিচার ক্ষমতা, প্রজ্ঞা, বিবেক, বুদ্ধিমত্তা, আত্মশক্তি, উদ্ভাবনী শক্তি, চিন্তাশক্তি প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যও কি বিবর্তনের ফল? যা বানর কিংবা শিম্পাঞ্জির মধ্যে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। সৃষ্টিকুলের মধ্যে একমাত্র মানুষই কথা বলতে পারে। স্বরযন্ত্রের সাহায্যে শব্দ তৈরী করে কথা বলার জন্য মানুষের মস্তিকে একটা অঞ্চল রয়েছে যার নাম ‘ব্রোকার জোন’। শিম্পাঞ্জি, গরিলা, বানর কিংবা অন্য যে কোন প্রাণীর মস্তিষ্কে ব্রোকার জোনের সন্ধান মেলেনি। তাই অন্যান্য প্রাণীরা কথা বলতে পারে না। এসব বৈশিষ্ট্য ছাড়াও ৬টি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য মানুষের আছে যা বানর কিংবা শিম্পাঞ্জির মধ্যে নেই। যথা-

১. চলন : শুধু মানুষই পুরোপুরি দু’পায়ে হাঁটতে সক্ষম।

২. মুষ্টিবদ্ধতা : মুষ্টিবদ্ধ করার ক্ষমতা কেবল মানুষের রয়েছে। হাতের পাঁচটি আঙ্গুল ইচ্ছে মতো চালনা করে লেখার কাজ, অস্ত্র চালানোর কাজ এবং অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করতে পারে কেবল মানুষই।

৩. মস্তিষ্কের বিকাশ : মানুষের মস্তিষ্ক এতো বেশী উন্নত যার দরুণ নভোম-ল ও ভূ-ম-লের পরতে পরতে অভিযান চালাতে মানুষ সক্ষম।

৪. শৈশব ও প্রাক বয়ঃসন্ধিকাল : মানুষের শৈশব ও প্রাক বয়ঃসন্ধিকাল দীর্ঘ হওয়ায় মা ও শিশুর সম্পর্ক ঘনিষ্ট হয়েছে এবং মায়ের কাছ থেকে শিশু শিক্ষা লাভের সুযোগ পেয়েছে।

৫. সামাজিক জীবন : উন্নত সামাজিক জীবন মানুষের অন্যতম সাফল্য এবং পৃথিবীতে প্রাধান্য বিস্তারের অন্যতম মূল শক্তি।

৬. নৈতিক বিকাশ : নীতিগতভাবে মানুষ সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ, আলো-আধার ইত্যাদি পার্থক্য করতে পারে।

মলিকুউলভিত্তিক কার্বন ব্যবহারের ফলে যেসব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে সে বিক্রিয়ার ধারাবাহিকতার মধ্যে সৃষ্ট প্রক্রিয়াকে বিজ্ঞানীরা জীবন হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। এ প্রক্রিয়া দ্বারা জীবন একটি সিস্টেমে পরিণত হয়েছে এবং জীবনের এ সিস্টেম বৃদ্ধি ও প্রজনন কাজে সাহায্য করেছে। যেসব কোষ দ্বারা মানুষ সৃষ্টি হয় সেসব কোষকে প্রধানত চার ধরণের জৈব পদার্থ (ঙৎমধহরপ ংঁনংঃধহপব) পার্থক্য করে দেখাতে পারে। এসব জৈব পদার্থ হলো কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাটস, নিউক্লিক এসিড এবং প্রোটিন। এ চার উপাদানের সাথে থাকে অজৈব বস্তু। জীবনের উৎপত্তি সম্পর্কে যে আধুনিক চিন্তাভাবনা তা হলো কিভাবে জৈব বস্তু অস্তিত্ব লাভ করেছে।

প্রাণীদেহ তৈরী হয় একটার পর একটা কোষ সাজিয়ে। কোষের অভ্যন্তরে যে নিউক্লিয়াস রয়েছে তার মধ্যে আছে উঘঅ। জীবনের শুরু অবশ্যই উঘঅ থেকে। ডিএনএ-এর গঠন পদ্ধতি এতই জটিল যে, এটিকে দেখতে কিছুটা মোচড়ানো (ঃরিংঃবফ) মইয়ের মত মনে হয়। বিজ্ঞানীরা একে বলেন উড়ঁনষব ঐবষরী (স্ক্রুর ন্যায় পেঁচানো)। এ মইয়ের ধাপগুলো চার ধরণের মলিকুউলের বহুবিধ জোড়ার সংযোগে তৈরী হয়ে থাকে। এরা হলো এ্যাডেনিন (অফড়হরহ), থাইমিন (ঞযুসরহব), গুয়ানিন (এঁধহরহব), ও সাইটোসিন (ঈুঃড়ংরহব)।

উঘঅ-ই প্রাণের মৌলিকতম অণু যা বংশগতির ধারক আর বাহক। মানুষ যে দেখতে ঠিক মানুষেরই মত, বানর কিংবা শিম্পাঞ্জির মতো নয়। তার কারণ মানুষের উঘঅ ওদের উঘঅ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বিশ্বের প্রতিটি প্রণীরই রয়েছে তার নিজস্ব পরিচায়ক আলাদা উঘঅ। আবার দু’টি মানুষ যে দেখতে এক রকম হয় না তার কারণ হচ্ছে দু’জন মানুষের মধ্যেও থাকে আলাদা উঘঅ। পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষের উঘঅ-এর গঠন আলাদা আলাদা। এরই বাস্তব প্রয়োগ দেখা যায় ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং এ। যেহেতু দু’টি মানুষের ডিএনএ এক রকম হতে পারে না, তাই ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং হয়ে দাঁড়িয়েছে আজকে সনাক্তকরণের অব্যর্থ হাতিয়ার।

তাহলে বলা যেতে পারে একটি প্রাণী যেসব কোষ দিয়ে তৈরী সেই কোষের মধ্যকার উঘঅ হচ্ছে তার গোটা শরীরের ব্লু-প্রিন্ট। বংশগতি বৈশিষ্ট্যের ধারক আর বাহক উঘঅ (উবড়ীুৎরনড়হঁপষবরপ অপরফ) যার মধ্যে ধরা থাকে শারীরিক ও মানসিক গঠন, চেহারার প্রতিচ্ছবি এবং আচার আচারণগত বৈশিষ্ট্য। বানর কিংবা শিম্পাঞ্জির বিবর্তন থেকে মানুষ সৃষ্টি হয়ে থাকলে মানুষের সারা শরীর লোম দ্বারা আবৃত থাকত। মানুষের লেজ গজাত এবং বানরের বৈশিষ্ট্য মানুষের উঘঅ-এর মধ্যে ধরা থাকত।

পৃথিবীর নিখিল ধর্মীয় প-িতগণ বলেছেন, আসলে দুর্মতি ডারউইন মানুষকে নাস্তিকতার দিকে ধাবিত করার উদ্দেশ্যে বিবর্তনবাদ তত্ত্বটি দাঁড় করিয়েছেন। কারণ সমস্ত ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে, মানুষের একজন আদি পুরুষ আছেন, যিনি আমাদের আদি পিতা আদম ও মা হাওয়া (‘আলাইহিস্ সালাম)।

মানুষ যে স্বতন্ত্র কিছু নয়; বরং মহান আল্ল¬াহর সৃষ্ট জীব। বিজ্ঞানীরা এ বক্তব্য বিশ্বাস করেন। কিন্তু এ বক্তব্যের সমর্থনে এ যাবত আনুষ্ঠানিক কোন তথ্য প্রমাণ হাজির করতে পারেননি। পক্ষান্তরে মানুষ যে মহান আল্লা¬হর সৃষ্টি নয়, অর্থাৎ- কুরআন ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে মানব সৃষ্টি সংক্রান্ত বক্তব্য যে সত্য নয় সে সম্পর্কেও বিজ্ঞান কোন দলিল-প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অধিকন্তু নাস্তিক্যবাদের স্বপক্ষে স্বতঃসিদ্ধ কোন শক্তিশালী প্রমাণ এ যাবত বিজ্ঞানীরা পাননি।

তবে এটা পজিটিভলি স্বীকার করা হয় যে, মানুষ সৃষ্টির সূচনায় যেসব উপাদান (মৃত্তিকা ও পানি) কুরআন ব্যাপকভাবে উল্লেখ করেছে, তা বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সত্য। মৃত্তিকা অর্থাৎ- মৃত্তিকার উপাদান মলিকিউল অথবা মৃত্তিকার সারনির্যাস (সুলালাত) হলো মানুষের দেহ গঠনের রাসায়নিক উপাদান। মানবদেহ পরিগঠনের প্রয়োজনীয় রাসায়নিক উপাদান যেগুলো মলিকিউল তৈরী করে সেসব উপাদান ও উপকরণ মৃত্তিকায় বিদ্যমান। এটা সত্য যে, সৃষ্টির গোড়াতে সৃষ্টিশীল বিবর্তনের একটি ধারা প্রাণী জগতে চালু ছিল। এ সৃষ্টিশীল বিবর্তন দুর্মতি ডারউইনের তথাকথিত বিবর্তনবাদ-এর ধারণা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তাছাড়া সৃষ্টিশীল বিবর্তন তথা রূপান্তর প্রক্রিয়া বিজ্ঞানের একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য -একথা বিজ্ঞানের ছাত্রদের মধ্যে কে-না জানে।

সুতরাং সৃষ্টিশীল বিবর্তনের এক পর্যায়ে মহাশক্তিধর ও সর্বোময় সৃষ্টিকর্তা এ মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, তিনি পৃথিবীতে নতুন এক জোড়া জীবন্ত প্রাণী সৃষ্টি করবেন এবং এ জীবন্ত প্রাণীজোড়ার গঠন উপাদানগুলো নিয়ে মানুষ চিন্তা গবেষণা করে সৃষ্টির কৌশলগত প্রক্রিয়া উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে।

অপরপক্ষে, এই ‘জীবন্ত প্রাণীদ্বয়’ সৃষ্টির পূর্বে পৃথিবীতে আরও অনেক ‘জীবন্ত প্রাণী’ বিদ্যমান ছিল। ঐসব জীবন্ত প্রাণী সৃষ্টিশীল বিবর্তনবাদ প্রক্রিয়ায় পরিব্যপ্ত ছিল। তাদের গঠনাকৃতি, দেহাবয়ব, শরীরিক শক্তি ও সক্রিয় ক্ষমতা ছিল। কিন্ত তাদের ছিল না বাকশক্তি, প্রজ্ঞা, বুদ্ধিমত্তা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা, বিবেকবোধ ও চিন্তাশক্তি।

সুতরাং এটা খুবই স্পষ্ট যে, মহান আল্ল¬াহর মহতি ইচ্ছায় সৃষ্টিশীল বিবর্তনের ধারায় একজোড়া ‘জীবন্ত প্রাণী’ সৃষ্টি হলো। যারা আজকের গোটা মানব জাতির আদি পিতা মাতা (ঞযব ড়ৎরমরহধষ ঢ়ধৎবহঃং ড়ভ সবহ)। আল কুরআনে আদি পিতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে আদম (‘আলাইহিস্ সালাম)। আদম শব্দের অভিধানিক অর্থ ঊধৎঃয বা গোধুমবর্ণ মাটি। জীবনের শুরু যেহেতু উঘঅ থেকে গোধুমবর্ণের মাটি কিংবা কাদামাটি উঘঅ ও প্রোটিন উপাদানে অণুঘটক (ঈধংঃধষুংঃ) হিসেবে কাজ করে। ক্যাটালিস্ট নিজের পরিবর্তন না ঘটিয়ে অন্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। এই পরিবর্তন বিবর্তনের ধারায় প্রবাহিত হয়ে জীবন্ত জীবন জোড়ার (আদম ও হাওয়া) বংশধরদের ও শারীরিক গঠন কাঠামোর পদ্ধতি-প্রক্রিয়ার বিবর্তন ও রূপান্তর ঘটে চলে ভ্রুণ (ঊসনৎুড়) সৃষ্টির পর থেকে। এটা হলো আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের দীর্ঘ দিনের আবিষ্কার, গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফলজাত সিদ্ধান্ত।

মানুষ যে মহান আল্ল¬াহর সৃষ্টজীব, উপরের আলোচনা হলো তারই যৌক্তিক ব্যাখ্যা। কুরআন বলেছে, আল্ল¬াহ তা‘আলা মানুষ সৃষ্টি করেছেন সে রকম আকার-আকৃতি দিয়ে, যে রকম আকার-আকৃতি তিনি ইচ্ছা করেছেন। মহামহিম মহান আল্ল¬াহর এই ইচ্ছার প্রকাশ ঘটেছে একটা সাংগঠনিক পরিকল্পনার মাধ্যমে। এই পরিকল্পনার ধারায় প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোর পরিবর্তন, বিবর্তন ও রূপান্তরের মধ্য দিয়ে মানুষ গড়ে উঠেছে সুঠামদেহী, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামঞ্জস্যপূর্ণ ও গৌরবম-িত সৃষ্টজীব হিসেবে, যা শুরুতে একটি ফর্মুলার মাধ্যমে দেখানো হয়েছে।

আল্লাহ তা‘আলা আদম (‘আলাইহিস্ সালাম)-কে সৃষ্টি করার পর তাকে জ্ঞান বিজ্ঞান শিক্ষা দিয়ে সমস্ত সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেন এবং তার নাফস থেকে একজন সঙ্গিনী (ঝঢ়ড়ঁংব) সৃষ্টি করেন। যার নাম হাওয়া (‘আলাইহিস্ সালাম)। তিনি সমগ্র মানব জাতির আদি জননী (ঙৎরমরহধষ সড়ঃযবৎ) হাওয়া (‘আলাইহিস্ সালাম)। আদম ও হাওয়ার শুভ বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর উভয়ের মিলনের পর মাতৃগর্ভে সন্তান সৃষ্টি হয় যা ২৮০ দিন, অর্থাৎ- ৯ মাস ১০দিন পর সুন্দর মানবরূপে ভূমিষ্ট হয়। এভাবে বিশ্বময় গোটা মানব জাতি সম্প্রসারিত হয়েছে এবং মানুষ সৃষ্টির এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সরাসরি মাটি থেকে মানুষ সৃষ্টির আর প্রয়োজন নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوْا رَبَّكُمُ الَّذِيْ خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيْرًا وَنِسَاء﴾

“হে মানব জাতি! তোমাদের প্রভুর অনুগত হও যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার স্ত্রীকে সৃষ্টি করেছেন। আর তাদের দু’জন থেকে বিস্তার করেছেন অগণিত নারী-পুরুষ।” 

﴿وَاللهُ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَجَعَلَ لَكُم مِّنْ أَزْوَاجِكُم بَنِيْنَ وَحَفَدَةً وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ أَفَبِالْبَاطِلِ يُؤْمِنُوْنَ وَبِنِعْمَتِ اللهِ هُمْ يَكْفُرُوْنَ﴾

“আল্ল¬াহ তোমাদের নাফস থেকে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং উভয়ের মাধ্যে থেকে অপত্য আর পৌত্রাদী সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ সরবরাহ করেছেন। অতএব, তারা কি অযৌক্তিক বিষয়ে বিশ্বাসস্থাপন করে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করে?” 

উক্ত আয়াত দু’টি থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ডারউইনের মানব বিবর্তনবাদ তত্ত্বটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক এবং অযৌক্তিক, যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

মানুষ বানরে রূপান্তরিত হওয়ার একটি ঘটনা আল-কুরআনে উল্লেখ আছে। সম্ভবত মি. ডারউইন উক্ত ঘটনাটি উল্টো করে মানব বিবর্তনবাদ তত্ত্বটি সাজিয়েছে।

ঘটনাটি হচ্ছে মাদায়েন ও তুর পাহাড়ের মধ্যবর্তী সমুদ্রের তীরে একটি জনপদ ছিল যার নাম আইল। ইহুদীরা সেখানে বসবাস করত। আল্লাহ তা‘আলা দাঊদ (‘আলাইহিস্ সালাম)-কে তাদের নাবী করে পাঠিয়েছিলেন। প্রতি শনিবার নদীর ধারে প্রচুর মাছ এসে তাঁর খুৎবাহ্ শুনত। তাই আল্ল¬াহ তা‘আলা শনিবারে মাছ শিকার করা ইহুদীদের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলেন। এ আদেশ পাওয়ার পর ইহুদীরা দু’দলে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল মহান আল্ল¬াহর আদেশ মেনে নিয়ে শনিবারে মাছ শিকার করা থেকে বিরত থাকে। অপর দল একটি অপকৌশল অবলম্বন করে নদীর ধারে ধারে কূপ খনন করে রাখে এবং শনিবারে মাছগুলোকে তারা কূপের ভিতর ঢুকিয়ে আটকে দিত। পরের দিন আটকানো মাছগুলো শিকার করত। একদিন সকাল বেলা জনপদের লোকেরা লক্ষ্য করলেন, এরূপ অপকৌশল অবলম্বনকারী তথা মহান আল্লাহর আদেশ আমান্যকারী ইহুদীদের বস্তিতে অস্বাভাবিক নিরবতা বিরাজ করছে। তাই মহান আল্লাহর আদেশ মান্যকারী দল সেখানে পৌঁছে দেখলেন যে, সবাই বিকৃত হয়ে বানরে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। আল্ল¬াহ তা‘আলা বলেন :

﴿وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ الَّذِيْنَ اعْتَدَوْا مِنكُمْ فِيْ السَّبْتِ فَقُلْنَا لَهُمْ كُوْنُوْا قِرَدَةً خَاسِئِيْنَ﴾

“তোমরা তাদেরকে ভালরূপে জেনেছ, যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমালংঘন করেছিল। আমি বললাম তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও।” 

﴿فَلَمَّا عَتَوْا عَنْ مَّا نُهُوْا عَنْهُ قُلْنَا لَهُمْ كُوْنُوْا قِرَدَةً خَاسِئِيْنَ﴾

“যখন তারা সীমা অতিক্রম করতে লাগল সে কর্মে যা থেকে তাদের বারণ করা হয়েছিল। তখন আমি নির্দেশ দিলাম, তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও।”  ###



 m~iv Avb& wbmv 4 : 1|

  m~iv Avb& bvn&j 16 : 72|

  m~iv Avj evK¡vivn& : 64|

  m~iv Avj AvÔivd 7 : 166|


আপনার মন্তব্য

ঢাকায় সূর্যোদয় : 5:59:35 সূর্যাস্ত : 5:27:01

সাপ্তাহিক আরাফাতকে অনুসরণ করুন

@সাপ্তাহিক আরাফাত