প্রশ্ন (০১) : ঈদুল আযহার তাকবীর কখন থেকে শুরু করা যাবে? আমাদের সমাজে অনেকেই বলেন- যিলহাজ্জ মাসের ১ম তারিখ থেকেই তাকবীর দিতে হবে- এটি কতখানি সহীহ? জানিয়ে বাধিত করবেন।
আব্দুল জাব্বার
গাছবাড়ী, কানাইঘাট, সিলেট।
জবাব : মূলতঃ ঈদুল আযহার তাকবীর ঈদের রাত অর্থাৎ- ৯ তারিখ দিবাগত রাত হতেই শুরু হয়। তবে আরাফার দিন ফযরের সালাত থেকে তাকবীর দেয়া সুন্নাত।[১] আর যিলহাজ্জ-এর প্রথম তারিখ থেকে তাকবীর দেয়া মুস্তাহাব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
﴿وَيَذْكُرُوْا اسْمَ اللهِ فِيْ أَيَّامٍ مَعْلُوْمَاتٍ﴾
অর্থাৎ- “আর যাতে তারা আল্লাহর নাম নেয় নির্ধারিত দিনসমূহে।”[২] আল্লাহ তা‘আলা আরোও বলেন :
﴿وَاذْكُرُوْا اللهَ فِيْ أَيَّامٍ مَعْدُوْدَاتٍ﴾
অর্থাৎ- “আর তোমরা আল্লাহকে স্মরণ করো গণনার দিনসমূহে।”[৩] সাহাবী ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস ও ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।[৪] অতএব ১ তারিখ থেকে তাকবীর দেয়ার বিশুদ্ধতা প্রমাণিত। আল্লাহু আ‘লাম।
প্রশ্ন (০২) : ঈদের দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ দিন বেশী নেকী অর্জনের দিন। তাই ঈদের সালাতের আগে কিংবা পরে কোনো নফল সালাত আদায় করা যাবে কি? এ বিষয়ে জানালে উপক্রিত হব।
মুহা. রুহুল আমীন
চিরিরবন্দর, দিনাজপুর।
জবাব : কোনো ‘ইবাদত করার জন্য কুরআন ও সহীহ হাদীসের দলীল থাকা আবশ্যক। ঈদের দিন গুরুত্বপূর্ণ ও নেকী অর্জনের দিন হওয়া সত্ত্বেও ঐ দিন ঈদগাহে ঈদের সালাতের আগে-পরে কোনো সালাত আদায় করা যাবে না। কেননা এ বিধান কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ (رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا) : أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ صَلَّى يَوْمَ الفِطْرِ رَكْعَتَيْنِ لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلَا بَعْدَهَا.
সাহাবী ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হুমা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন : “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদের দু’রাকা‘আত সালাত আদায় করেছেন। তার আগে ও পরে কোন সালাত আদায় করেননি।”[৫]
প্রশ্ন (০৩) : বর্তমানে আমরা মাস্‘আলার সঠিক-বেঠিক নিয়ে অনেকটা সংশয়ে থাকি। আমি জানতে চাচ্ছি যে, আমরা যে ঈদের তাকবীর বলে থাকি : “আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লা-হু আল্লা-হু আকবার, ওয়া লিল্লা-হিল হামদ”-এ তাকবীর কতটা সহীহ? আশা করি সঠিক জবাব দিয়ে আমাদের সংশয় দূর করবেন। হুমায়ূন কবির, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।
জবাব : উপরোক্ত বাক্যে তাকবীর দেয়া সাহাবীদের (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হুমা) ‘আমল দ্বারা প্রমাণিত।[৬] কাজেই এভাবে তাকবীর দেয়া যাবে। আর ছোট-বড় প্রত্যেক ‘আমলের ক্ষেত্রে সহীহ না য‘ঈফ, তা যাচাই করা উচিৎ। কেননা সুন্নাত বহির্ভূত ‘আমল প্রত্যাখাত।[৭]
প্রশ্ন (০৪) : আমি একটি মহল্লার সালাতের ঈমামতি করে থাকি। আমি জানতে চাচ্ছি- ঈদুল আযহা‘র খুৎবায় কোন্্ বিষয় প্রাধান্য দেয়া উচিৎ?
হা. মাও. মিসবাহুদ্দীন আকন্দ
গোবিন্দপুর, বুড়িচং, কুমিল্লা।
জবাব : খুৎবায় যে কোন উপদেশমূলক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে। তবে ঈদুল আযহার খুৎবায় কুরবানী সংক্রান্ত মাস‘আলা-মাসায়েল নিয়ে আলোচনা করা উচিৎ। প্রিয় নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল আযহায় খুৎবায় কুরবানীর মাস‘আলা নিয়ে বেশীরভাগ খুৎবাহ্ প্রদান করতেন।[৮]
প্রশ্ন (০৫) : জনৈক ‘আলেম বলেছেন- জুমু‘আর দিনে ঈদ হলে জুমু‘আহ্ আদায় না করলেও চলবে- একথা সঠিক কি? দয়া করে দলীলসহ জানিয়ে কৃতার্থ করবেন।
মো. আরমান, পাগলা, নারায়ণগঞ্জ।
জবাব : জুম‘আর দিন ঈদ হলে এবং যথারীতি ঈদের সালাত আদায় করলে জুমু‘আর সালাত আদায় না করলেও চলবে। প্রিয় নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাহাবা (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হুমা)-দেরকে জুমু‘আর ক্ষেত্রে রুখসাত দিয়েছেন।[৯] তবে আদায় করা উত্তম।[১০]
প্রশ্ন (০৬) : কুরবানীর গোস্ত কোনো অমুসলিমকে দেয়া যাবে কি? দেখা যায়- আমাদের সমাজে কোনো কোনো অমুসলিম প্রতিবেশী রয়েছেন, যাদেরকে কুরবানীর গোস্ত দিলে তারা তা গ্রহণ করেন। বিষয়টি মানবিক বিধায় বিবেচনা করা যায় কি না? জানালে খুশি হব।
আবূ মূসা
কমরগ্রাম, জয়পুরহাট।
জবাব : অমুসলিম দু‘ধরনের। ১. এমন অমুসলিম, যারা নিরীহ এবং সামাজিক। ২. এমন অমুসলিম, যারা ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী। তারা সদা ইসলামের ক্ষতি করতে চায়। অতএব, যারা ইসলামের ক্ষতি করে, তাদেরকে কোন প্রকার সাহায্য-সহায়তা করা যাবে না। পক্ষান্তরে ক্ষতি করে না এমন নিরীহ অমুসলিমকে কুরবানীর গোস্ত দেয়া জায়িয। এ মর্মে মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীকে দলিল হিসেবে পেশ করা যায়। এরশাদ হচ্ছে-
لَا يَنْهَاكُمُ اللهُ عَنِ الَّذِيْنَ لَمْ يُقَاتِلُوْكُمْ فِيْ الدِّيْنِ وَلَمْ يُخْرِجُوْكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوْهُمْ وَتُقْسِطُوْا إِلَيْهِمْ.
“যারা তোমাদের দীনের বিরুদ্ধে লড়াই করে না এবং তোমাদেরকে তোমার ঘর-বাড়ি ছাড়া করেনি, তাদের প্রতি ইহসান করতে ও তাদের ন্যায়-বিচার করতে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে নিষেধ করেন না।”[১১] অতএব, নিরীহ অমুসলিমদেরকে কুরবানীর গোস্ত দেয়া যাবে।
প্রশ্ন (০৭) : আমরা শুনেছি- “যারা কুরবানী করতে পারবে না -তারা যিলহাজ্জের ১ম তারিখ থেকে কুরবানী পর্যন্ত নখ-চুল কাটবে না। তাহলে তারা একটি কুরবানীর নেকী পেয়ে যাবে- উপরোক্ত মাস‘আলাটি কি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত?
মো. আমজাদ হোসেন
কাজলা, ইসলামপুর, জামালপুর।
জবাব : উপরোক্ত বক্তব্য সঠিক নয়; বরং যারা কুরবানী দেবেন তাদের জন্য যিলহাজ্জের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর হতে কুরবানী করা পর্যন্ত সময়ে নখ-চুল কাটা নিষেধ।
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ (رَضِيَ اللهُ عَنْهَا)، أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ : إِذَا رَأَيْتُمْ هِلَالَ ذِيْ الْحِجَّةِ، وَأَرَادَ أَحَدُكُمْ أَنْ يُضَحِّيَ، فَليُمْسِكْ عَنْ شَعْرِهِ وَأَظْفَارِهِ.
উম্মু সালামাহ্ হতে বর্ণিত। রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন তোমরা যিলহাজ্জ মাসের চাঁদ দেখবে এবং কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা করে, সে যেনো চুল নখ না কাটে।[১২] কাজেই এটি কুরবানীদাতাদের ক্ষেত্রেই সুন্নাত; অন্যদের জন্য নয়।
প্রশ্ন (০৮) : জনৈক ‘আলেম জামালপুর জেলার এক মাহফিলে বলেছেন যে, ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা ও একে অপরকে ঈদ মুবারক বলা বিদ‘আত। তাছাড়া এ ব্যাপারে তিনি চ্যালেঞ্জও ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে ইসলামী শরী‘আতের সঠিক ফায়াসলা কি? জানিয়ে বাধিত করবেন। আব্দুল করীম, সেক্রেটারী,
জামালপুর জেলা জমঈয়তে আহলে হাদীস।
জবাব : উক্ত জনৈক ‘আলেমের বক্তব্য সঠিক নয়; বরং তা বিভ্রান্তিকর, মনগড়া ও ধারণা প্রসূত। সৌদী আরবের প্রখ্যাত ‘আলেম আল্লামা মুহাম্মদ ইবনু সালেহ আল উসাইমীন (রাহিমাহুল্লা-হ) বলেন : সাহাবায়ে কিরাম হতে পরস্পর ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় প্রমাণিত। তিনি আরো বলেন তাছাড়া যদি মেনেও নেয়া যায় যে, তা প্রমাণিত নয় তদুপরি তা নিষিদ্ধ হবে না, কেননা সেটা ‘ইবাদত গত কোনো বিষয় নয়; বরং সেটা আদত তথা অভ্যাস বা সামাজিকতা হিসেবে গণ্য সুতরাং তা অবৈধ হবার কোনো প্রশ্নই উঠে না। অনুরূপ আল্লামা সালেহ আল ফাউযানেরও ফাতাওয়া রয়েছে তবে তিনি বলেন ঈদ মুবারক বা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় হতে হবে ঈদের দিন কিংবা ঈদ পরবর্তী সময়ে, কিন্তু ঈদের পূর্বে তা বলার কোনো প্রমাণ সালাফ থেকে আমার জানা নেই।
ইমাম ইবনু কুদামাহ্ আল মুগনী গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে একাধিক হাদীস উল্লেখ করেছেন। যেমন- সাহাবী আবূ উমামা বাহেলী (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) হতে বর্ণিত যে, সাহাবায়ে কিরাম ঈদের ময়দান হতে ফিরে এসে একে অপরকে বলতেন- “তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম”, অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘আলা আমাদের ও আপনাদের সবারটাই কবুল করুন। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রাহিমাহুল্লা-হ) বলেন, আবূ উমামার হাদীসটির সনদ উত্তম।[১৩]
ইমাম মালেক (রাহিমাহুল্লা-হ) বলেন, তখন থেকে মদীনাই এই প্রথা চলমান রয়েছে। সুনানে বাইহাকীতে ওয়াসিলাহ বিন আসকাহর বর্ণনায় নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকেও অনুরূপ বর্ণনা এসেছে। মূলতঃ উক্ত দু‘আটি তৎকালীন যুগে ঈদের শুভেচ্ছার বিনিময় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সুতরাং বর্তমান যুগেও যে কোনো শালীন ও ভদ্র শব্দ দ্বারা যেটা সমাজে প্রচলিত তা দ্বারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অবশ্যই জায়িয তবে উক্ত দু‘আটি ব্যবহার করা বেশি উত্তম হবে।
তাছাড়া শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ্ (রাহিমাহুল্লা-হ) বলেন, ঈদ মোবারক ও অনুরূপ বাক্য আদান প্রদান বৈধ যা কতিপয় সাহাবায়ে কিরাম হতে প্রমাণিত। ইমাম আহমাদও এ মতের উপর সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি বলেন : আমি প্রথমে কাউকে ঈদ মুবারাক জানাবো না তবে কেউ যদি আমাকে ঈদ মুবারাক বলে তাহলে আমি অবশ্যই তার শুভেচ্ছার উত্তর প্রদান করব।[১৪]
প্রশ্ন (০৯) : কুরবানীর পশুর চামড়া বিক্রি করে নিজে খাওয়া যাবে কি-না? কেননা, আমরা একজন ‘আলেমের কাছ থেকে শুনেছি- কুরবানীর পশুর চামড়া দ্বারা নিজেরা উপকার লাভ করা যায়। এ বক্তব্য কতটা সঠিক? আর সঠিক হলে উপকার দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে? আশাকরি উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।
মো. নুরুদ্দিন মিয়া
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।
জবাব : কুরবানীর পশুর চামড়া কুরবানীরই একটি অংশ। আর কুরবানীর জন্য নির্ধারিত পশু বিক্রয় বা বদল করা কোনোটিই জায়িয নয়। মুসনাদে আহমাদে “পশুর চামড়া দ্বারা উপকৃত হওয়ার” যে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে, তা মাওকুফ; বরং সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিম-এ কুরবানীর পশুর চামড়া সাদাক্বাহ্ করার কথা বলা হয়েছে।[১৫] কাজেই চামড়াটি সরাসরি সাদাক্বাহ্ করে দেয়া কিংবা নিজ তত্ত্বাবধানে বিক্রি করে গরীব-মিসক্বীনদের মধ্যে বন্টন করে দেয়াই ইসলামের বিধান এবং অধিক সওয়াবের কাজ। তবে চামড়া দ্বারা ব্যাগ-জুতা ইত্যাদি প্রয়োজনীয় আসবাব তৈরী করে নিজে ব্যবহারের মাধ্যমে উপকৃত হওয়া বৈধ হবে। মহান আল্লাহই অধিক জানেন (আল্লাহু তা‘আলা আ‘লাম)।
প্রশ্ন (১০) : হায়েয বা ঋতু অবস্থায় মহিলারা মাসজিদে প্রবেশ করতে পারবে কি-না? বৃষ্টির কারণে এবার আমরা মাসজিদে ঈদের জামা‘আত করছি। আমার স্ত্রীকে আমি ঋতু অবস্থায় মাসজিদে ঈদের জামা‘আতে প্রত্যক্ষ ও দু‘আয় শরীক হওয়ার জন্য নিয়েছি। তাতে কি আমার কোনো পাপ হবে? জানালে খুশি হব।
আব্দুল্লাহ মাহমূদ
লালপুর, নাটোর।
জবাব : হায়িয বা ঋতু অবস্থায় মাসজিদে অবস্থান ঠিক নয়। কেননা, মাসজিদ সালাত, যিক্র-আযকার ও ই‘তিকাফের জন্য নির্ধারিত পবিত্র স্থান। তবে বিশেষ প্রয়োজনে শুধু যাতায়াত দোষনীয় নয়। ‘আয়িশাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হা) বলেন, “রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাসজিদে অবস্থান করছিলেন। আমাকে বললেন- হে ‘আয়িশাহ্! আমাকে কাপড়খানা এগিয়ে দাও। আমি বললাম : আমি তো হায়িয বা ঋতু অবস্থায় আছি। তিনি (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার হাতে তো তোমার ঋতু নেই। তখন আমি তা পৌঁছে দেই।”[১৬]
অতএব প্রমাণিত হয় যে, ঋতুবর্তী মেয়েরা প্রয়োজনে মাসজিদে প্রবেশ করতে পারবে, অতিক্রম করতে পারবে কিন্তু অবস্থান করতে পারবে না, সুতরাং আপনার এ কাজ করা ঠিক হয়নি। এজন্য মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন। মহান আল্লাহই অধিক জানেন (আল্লাহু আ‘লাম)।
প্রশ্ন (১১) : একবার কুরবানীর পশুর সংকট হয়েছিল। অনেক চেষ্টার পর আমি একটি গরু সংগ্রহ করে ১৩ যিলহাজ্জ সকালে তা কুরবানী করেছি। আমার এ কুরবানী সঠিক হবে কি?
কায়সার হামীদ, উত্তরা, ঢাকা।
জবাব : যিলহাজ্জ মাসের ১৩ তারিখ আইয়্যামে তাশরীকের শেষ দিন। এদিন কুরবানীর অন্তর্ভুক্ত। রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন : “আইয়্যামে তাশরীকের দিনগুলো খানা-পিনা ও মহান আল্লাহর যিকর-এর দিন।”[১৭] উক্ত হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, ১৩ তারিখে আপনার কৃত কুরবানী সঠিক হয়েছে। ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, ইবনুল কায়্যিম, শাওকানী, বিন বায ও ইবনু ঊসাইমীন (রাহিমাহুল্লা-হ) উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেছেন।[১৮] তবে কোনো কোনো ‘আলেম ১২ তারিখের মধ্যে কুরবানী সম্পন্ন করতে হবে মর্মে নিজ মত প্রকাশ করেছেন।[১৯] মহান আল্লাহই অধিক জানেন (আল্লাহু তা‘আলা আ‘লাম)।
প্রশ্ন (১২) : আমার ব্যক্তিগত কারণে আমি প্রায়ই জেলা বার-এ যাতায়াত করি। সেখানের একজন বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি আমাকে বললেন, খাসি করা খাশি বা গরু দ্বারা কুরবানী জায়িয হবে না। কেননা, এটা দ্বারা পশু ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়। আর ত্রুটিযুক্ত পশু কুরবানী মোটেও জায়িয নয়!
আবুল হোসেন, কাথোরা, গাজীপুর।
জবাব : কুরবানীতে পশু নির্দোষ তথা ত্রুটিমুক্ত হওয়া জরুরী। কিন্তু ত্রুটির সংজ্ঞা বা পরিমাণ নির্ধারণ করবে কে? নিশ্চিয়ই এ অধিকার কেবল শরী‘আত সংরক্ষণ করে; অন্য কেউই নয়। আর শরী‘আত পশু খাসি করাকে ত্রুটিপূর্ণ কাজ বলে অভিহিত করেনি; বরং হৃষ্ট-পুষ্টতার দিক থেকে এ কাজকে উত্তম বলে আখ্যা দিয়েছে। জাবির (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) হতে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যবেহ করার দিন দু’টি মোটা-তাজা খাসি করা ছাগল যবেহ করলেন।”[২০] বিগত যামানা হতে এর উপরই ফাতাওয়া জারি আছে। এর বিপরীত কোনো ফাতাওয়া পাওয়া যায়নি।[২১] অতএব, নিজ অভিমত হতে ফাতাওয়া দেয়া সংগত নয়। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে জেনে-বুঝে কথা বলার তাওফীক্ব দিন! আমীন!!
প্রশ্ন (১৩) : আমার ইলাকায় কুরবানীর পশুর চামড়া বিক্রীর অর্থ বন্টন নিয়ে বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে। এক শ্রেণীর লোক বলছে যে, এর সম্পূর্ণ অর্থ ফকির এবং মিসকিন এই দুই শ্রেণী ছাড়া আর কাউকে দেয়া যাবে না- কুরআন ও হাদীসের সনদসহ সমাধান চাই।
মাহবুবুর রহমান
মির্যাপুর, বগুড়া।
জবাব : কুরবানীর চামড়া বিক্রী না করে গোস্তের ন্যায় সাদাক্বাহ্ করা বা তা দ্বারা উপকৃত হওয়াই উত্তম। কেননা নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন :
وَأَنْ أَتَصَدَّقَ بِلَحْمِهَا وَجُلُوْدِهَا.
অর্থাৎ- [‘আলী (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) বলেন, নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন] যেনো আমি হাজ্জের তথা কুরবানীর জন্তুর গোস্ত ও চামড়া সাদাক্বাহ্ করে দেই।[২২]
তবে তা বিক্রী করে সাদাক্বাহ্ করে দেয়া ওয়াজিব। যা ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) ও ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লা-হ) হতে বর্ণিত হয়েছে।[২৩] আর যেহেতু তা সাদাক্বাহ্তুল্য সুতরাং ফকির মিসকিন ও অন্যান্য যারা সাদাক্বায় হক্বদার, যা আল্লাহ তা‘আলা সূরা তাওবাহ্-এর ৬০ নং আয়াতে বর্ণনা করেছেন- তাদের সকলেই তার হক্বদার। আল্লামা উবায়দুল্লাহ রহমানী মুবারকপুরী (রাহিমাহুল্লা-হ) ও অনুরূপ ফাতাওয়া প্রদান করেছেন।[২৪] সুতরাং কুরবানীর চামড়ার সাথে শুধু ফকির-মিসকিনকে খাস করা সমীচীন নয়, কেননা এ বিষয়ের উপর কোনো দলীল নেই।
প্রশ্ন (১৪) : আমাদের সমাজের কোথাও কোথাও দেখা যায় যে, মহিষ দ্বারা কুরবানী দেয়া হয়। আমার প্রশ্ন- মহিষ দ্বারা কুরবানী করা কি হাদীসসম্মত? বর্তমানে আমরা সঠিক-বেঠিক যাঁচাই করে ‘আমল করাকে পছন্দ করি। কেননা, চতুর্দিকে ভেজাল ‘আমলের ছড়াছড়ি দেখে আমরা বিব্রত হই। জানি না, ‘আমল করে কি আবার গুনাহগার হই (?) আশাকরি আপনাদের কাছে এর একটা সঠিক সমাধান পাব।
শরীফুদ্দিন মোল্লা, রসূলপুর, নরসিংদী।
জবাব : যেসব পশু দিয়ে কুরবানী করা যাবে, তার বর্ণনা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রদান করেছেন। এ তালিকায় মহিষের কথা নেই। কোনো কোনো ফকীহ এটিকে গরুর শ্রেণীভুক্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁদের অভিমতসমূহ যাঁচাই-বাছাই করে একথা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে, মহিষ দিয়ে কুরবানী করা একটি ক্বিয়াস বা অনুমানভিত্তিক অভিমত মাত্র। যেহেতু আমাদের সমাজে কুরবানী দেয়ার মতো হাদীসে উল্লেখিত প্রাণীসমূহ সহজলভ্য, তাই ক্বিয়াস নির্ভর ফাতাওয়ার ভিত্তিতে মহিষ দ্বারা কুরবানী না দেয়াই আমরা অধিকতর যুক্তিযুক্ত মনে করছি।
প্রশ্ন (১৫) : “ঈদের সালাতে ঋতুবর্তী নারীরাও উপস্থিত হবে এবং দু‘আয় শরীক হবে” -এ সম্পর্কিত বিধান জানিয়ে বাধিত করবেন।
নাসরিন আক্তার
কালিগঞ্জ, ঝিনাইদহ।
জবাব : ঈদের জামা‘আতে ঋতুবতী নারীরাও উপস্থিত হবে মর্মে হাদীসটি নিম্নরূপ :
عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ : أَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ، أَنْ نُخْرِجَهُنَّ فِىْ الْفِطْرِ وَالْأَضْحَى، الْعَوَاتِقَ، وَالْحُيَّضَ، وَذَوَاتِ الْخُدُوْرِ، فَأَمَّا الْحُيَّضُ فَيَعْتَزِلْنَ الصَّلَاةَ، وَيَشْهَدْنَ الْخَيْرَ، وَدَعْوَةَ الْمُسْلِمِيْنَ، قُلْتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ إِحْدَانَا لَا يَكُوْنُ لَهَا جِلْبَابٌ، قَالَ : ্রلِتُلْبِسْهَا أُخْتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَاগ্ধ.
উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হা) বলেন : আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আদেশ করেছেন, আমরা যেনো স্বাধীনা, ঋতুবতী ও পর্দানশীলা মহিলাদের দু’ঈদের দিন (ঈদগাহে যেতে) বের করি। যাতে তারা মুসলিমগণের জামা‘আতে এবং তাদের দু‘আতে শামিল হতে পারে। তবে ঋতুবতীগণ যেনো সলাত থেকে বিরত থাকে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে- তারা সলাতের স্থান থেকে আলাদা বসে। তারা কল্যাণে এবং মুসলিমদের দু‘আয় শরীক হবে। আমি [উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হা)] বললাম : ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমাদের কারো (শরীর ঢাকার মতো) বড় চাদর নেই। নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তার বোন যেনো তাকে তার চাদর পরায়।[২৫]
“মুসলিমগণের দু‘আয় শরীক হবে” -এর অর্থ হলো, খুৎবায় ইমামের নাসীহাত ও আম দু‘আয় শরীক হবে। কেননা ঈদের সালাতের পর ইমাম মুক্তাদী সম্মিলিতভাবে মোনাজাত করার প্রমাণে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে কোনো ‘আমল বর্ণিত হয়নি।[২৬]
প্রশ্ন (১৬) : ইমামের সাথে ঈদের জামা‘আত না পেলে করণীয় কি? এ বিষয়ে জানতে চাই।
আবূ নাসের
খিলগাঁও, ঢাকা।
জবাব : ইমামের সাথে ঈদের জামা‘আত না পেলে আপনি যথা নিয়মে দু’রাক‘আত সলাত পড়ে নিবেন।
আনাস (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) ঈদের সলাত ইমামের সাথে না পেলে তার পরিবার-পরিজন ও অধীনস্তদের সাথে নিয়ে একত্রিতভাবে যথা নিয়মে ঈদের সলাত পড়ে নিতেন।[২৭]
প্রশ্ন (১৭) : বিশেষ প্রয়োজনে ঈদাইনের সলাত মাসজিদে পড়ার প্রয়োজন হলে “তাহিয়্যাতুল মাসজিদ” দু’রাক‘আত সলাত পড়া যাবে কী?
রাশেদুল আলম
টেকেরহাট, মাদারিপুর।
জবাব : দুই ঈদের সলাত এবং বৃষ্টি প্রার্থনার সলাত সাধারণভাবে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠিত হলে ময়দানে আগমন করে কোনোরূপ নফল বা তাহিয়্যাতুল মাসজিদ সলাত আদায় শরী‘আত সম্মত নয়। সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) থেকে এই মর্মে হাদীস বর্ণিত হয়েছে-
্রأَنَّ النَّبِيَّ ﷺ خَرَجَ يَوْمَ الفِطْرِ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلَا بَعْدَهَا وَمَعَهُ بِلَالٌগ্ধ.
নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল ফিতরের দিনে বের হলেন অতঃপর দু’রাক‘আত ঈদের সলাত আদায় করলেন। সে দু’রাক‘আতের পূর্বে ও পরে কোনো সলাত আদায় করেননি এবং তার সঙ্গে ছিলেন বিলাল (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু)।[২৮]
যদি ঈদায়নের সলাত কোনো মাসজিদে আদায় করা হয় তবে মাসজিদে প্রবেশ করে “তাহিয়্যাতুল মাসজিদ” দু’রাক‘আত সলাত আদায় করাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে অন্য কোনো নফল সলাত আদায় করা যাবে না।[২৯]
প্রশ্ন (১৮) : ইব্রাহীম (‘আলাইহিস্ সালাম) ইসমা‘ঈল (‘আলাইহিস্ সালাম)-এর গলায় ছুরি চালিয়েছিলেন কি এবং যবেহর জন্য উপুড় করে শুইয়ে দিয়েছিলেন কি?
আবদুর রশীদ, হালিশহর, চট্টগ্রাম।
জবাব : ইব্রা-হীম (‘আলাইহিস্ সালাম) স্বীয় পুত্র ইসমা‘ঈল (‘আলাইহিস্ সালাম)-কে উপুড় করে নয়; বরং ডান কাত করে ক্বিবলামূখী করে শুইয়েছিলেন। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন :
﴿فَلَمَّا أَسْلَمَا وَتَلَّهُ لِلْجَبِيْنِ﴾
অর্থাৎ- “যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং তিনি [ইব্রাহীম (‘আলাইহিস্ সালাম)] তাকে (পুত্রকে) কাত করে শুয়ালেন।”[৩০]
“جَبِيْنِ” শব্দের সঠিক অর্থ হলো- “চেহারার এক পার্শ্ব”। মানুষের চেহারার ডান এবং বাম পার্শ্ব থাকে এবং এ দুয়ের মাঝে কপাল থাকে।[৩১]
কুরআন মাজীদের এ আয়াতাংশ থেকে স্পষ্টত বুঝা যায় ইসমা‘ঈল (‘আলাইহিস্ সালাম)-কে তাঁর পিতা ইব্রা-হীম (‘আলাইহিস্ সালাম) ডান কাতে ক্বিবলামূখী করে শুইয়ে দিয়েছিলেন।
ইমাম সুদ্দী (রাহিমাহুল্লা-হ) বলেন, ইব্রা-হীম (‘আলাইহিস্ সালাম) ইসমা‘ঈল (‘আলাইহিস্ সালাম)-কে যবেহ করার জন্য ছুরি চালিয়েছিলেন।[৩২] ছুরি তার ধার হারিয়ে ফেলে যেমন- ইব্রা-হীম (‘আলাইহিস্ সালাম)-কে পুড়তে আগুন তার দাহ্য শক্তি হারিয়ে ফেলেছিল।[৩৩]
প্রশ্ন (১৯) : ঈদ-উল-আযহাতে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে কিছু না খেয়েই যাওয়ার বিধান আমরা জানি। এক্ষণে প্রশ্ন হলো- ঈদগাহ থেকে ফিরে কুরবানীর মাংস দিয়েই খেতে হবে?
আলী আসগর, সেন্ট্রাল রোড, রংপুর।
জবাব : ঈদ-উল-আযহাতে ঈদের সলাত থেকে ফিরে আহার গ্রহণ করা যাবে। তবে কুরবানীর মাংস দিয়ে আহার করা মাসনূন ‘আমল। বুরাইদাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) বলেন,
্রكَانَ النَّبِيُّ ﷺ لَا يَخْرُجُ يَوْمَ الفِطْرِ حَتّٰى يَطْعَمَ، وَيَوْمَ النَّحْرِ لَا يَأْكُلُ حَتّٰى يَرْجِعَ فيأكل من نسيكته.
নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল ফিতরে বের হতেন না খাবার গ্রহণ না করে এবং কুরবানী ঈদে খাবার গ্রহণ করতেন না ঈদগাহ থেকে না ফিরে। তিনি কুরবানীর মাংস থেকে আহার করতেন।[৩৪]
প্রশ্ন (২০) : কুরবানীর পশুর গোশ্ত কাটা ও চামড়া ছিলার কাজে অংশগ্রহণকারীদের কুরবানীর গোস্ত দিয়ে মজুরী দিতে পারব কি না?
ওসমান গণী তুষার
নতুন ব্রীজ, চট্টগ্রাম।
জবাব : কুরবানীর পশুর গোস্ত কাটা ও চামড়া ছিলার কাজে অংশগ্রহণকারীদের কুরবানীর গোস্ত দিয়ে মজুরী দেয়া বৈধ নয়। এই মর্মে বর্ণিত হাদীসটি হলো-
عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ : ্রأَمَرَنِىْ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَنْ أَقُومَ عَلٰى بُدْنِهِ، وَأَنْ أَتَصَدَّقَ بِلَحْمِهَا وَجُلُوْدِهَا وَأَجِلَّتِهَا، وَأَنْ لَا أُعْطِيَ الْجَزَّارَ مِنْهَاগ্ধ.
‘আলী (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার কুরবানীর উটের সামনে আমাকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন... চামড়া ছিলা ও গোশ্ত কাটার জন্য মজুরী যেনো কুরবানীর জন্তুর কোনো অংশ হতে না দিই।[৩৫]
কুরবানীর পশুর গোস্ত কাটা ও চামড়া ছিলার কাজে অংশগ্রহণকারীদেরকে কুরবানীর পশুর গোশ্ত নয়; বরং টাকা বা অন্যকিছু দিয়েই মজুরী দিতে হবে। তবে তাদের কেউ দরিদ্র হলে তাকে কেবল দরিদ্র্য বিবেচনায় কিছু গোশ্ত দেয়া যাবে।
[১]. আশা শারহুল কাবীর- ৫/৩৭০, শারহু ইবনু রাজাব- ৬/১২৪।
[২]. আল-কুরআন : সূরা আল হাজ্জ/২৮।
[৩]. আল-করআন : সূরা আল বাক্বারাহ্/২০৩।
[৪]. ড. ‘আব্দুল্লাহ আল-জিব্রীন, ‘শারহু উমদাতিল আহকাম লি ইবনু কুদামাহ্/৪২৬।
[৫]. সহীহুল বুখারী- ৯৬৪, সহীহ মুসলিম- ৮৮৪।
[৬]. মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবাহ- ২/১৬৭।
[৭]. সহীহুল বুখারী- অধ্যায় : প্রতারণা, সহীহ মুসলিম- ১৭১৮।
[৮]. বুখারী- হা/৯৫৪, মুসলিম- হা/১৯৬২।
[৯]. নাসাঈ, ইবনু মাজাহ্- হা/১৩১০, তাহ্ঃ আলবানী, সহীহ।
[১০]. ফাতাওয়া ও মাসায়েল- ১৮১ পৃঃ।
[১১]. আল-কুরআন : সূরা আল মুসতাহিনা/৮।
[১২]. মুসলিম- হা/১৯৭৭, আবূ দাঊদ- ২৭৯১।
[১৩]. আল মুগানী- ২৫৯/২।
[১৪]. মাজমউল ফাতাওয়া- ২৫৩/২৪।
[১৫]. সহীহুল বুখারী- হা/১৭১৭, সহীহ মুসলিম- হা/১৩১৭।
[১৬]. সহীহ মুসলিম- হা/২৯৯।
[১৭]. সহীহ মুসলিম- হা/১১৪৯।
[১৮]. তাহমীদ-২৩/১৯৫, যাঃ মা’আদ-২/৩১৮, শারহুল মুমাতি’আ-৭/৪৯৯-৪৫০।
[১৯]. মুআত্তা- ২/৪৮৭।
[২০]. আবূ দাঊদ- হা/২৭৯৫ (হাসান)।
[২১]. মুগনী- ১২/৩৭১, আশ-শারহুল কাবীর- ৯/৩৫৫।
[২২]. বুখারী, মুসলিম।
[২৩]. মিরআতুল মাফাতীহ- ৭/৫৩।
[২৪]. মিরআতুল মাফাতীহ- পৃঃ ৭/৫৪-৫৫।
[২৫] মুসলিম- ১২/৮৯০, বর্ণনা মুসলিমের, মিশকাত- ১৪৩১।
[২৬] মিরআত- আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ মোবারকপুরী- ২/৩৩৩ পৃ.।
[২৭] ফাতাওয়া লাজনাহ আদ-দায়িমাহ লিল বুহুস আল ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা- ৮/৩০৫ ও ৩০৬ পৃ.।
[২৮] বুখারী- হা. ৯৮৯, মুসলিম- ১৩/৮৮৪, আহমদ- ১/৩৪০।
[২৯] ফাতওয়া লাজনাহ আদ-দায়িামাহ লিল বুহুস আল ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা- ৮/৩০৪ পৃ.।
[৩০] সূরা আস্ সা-ফ্ফা-ত ৩৭ : ১০৩।
[৩১] রাজকীয় সৌদী আরব থেকে প্রকাশিত আল কুরআনের উর্দূ অনুবাদ- পৃ. ১২৬২।
[৩২] ক্বাসাসুল ‘আম্বিয়াহ্ লিল ইমাম ইবনু কাসীর- পৃ. ১৩৯।
[৩৩] ক্বাসাসুল কুরআন- হামিদ আহমদ আত্ তাহির আল বাসইউনী, দারুল হাদীস কায়রো, পৃ: ১৪৮।
[৩৪] সুনান আত্ তিরমিযী- হা. ৫৪২, সুনান ইবনু মাজাহ্- হা. ১৭৫৬, মুসনাদ আহমাদ- ৫/৩৫২।
[৩৫] সহীহ মুসলিম- হা. ১৩১৭।
আপনার মন্তব্য1