শিশুর বিকাশে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের প্রভাব
আজকাল নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির বেশিরভাগ পরিবারে শিশুদের হাতে এই যন্ত্র দিয়ে অভিভাবকরা নিজেদের কর্ম সম্পাদন করে থাকেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিশুকে খাওয়ানোর সময় ডিভাইসটি ব্যবহার করা হয়। এতে একসময় তাদের মধ্যে এটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়, যেন এই যন্ত্র ছাড়া শিশুকে খাওয়ানো সম্ভবই না। এছাড়া অনেক দিন ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তাদের কারো কারো মধ্যে স্ক্রিন ডিপেনডেন্সি ডিস—অর্ডারস (এসডিডি) হতে পারে।
স্ক্রিন ডিপেনডেন্সি ডিস—অর্ডারসে শিশুদের মধ্যে কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। শারীরিক সমস্যাগুলো হলোÑ ঘুমের অসুবিধা, পিঠ বা কোমরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি। শারীরিক অসুবিধা ছাড়াও কারো কারো মধ্যে ইমোশনাল উপসর্গ, যেমন— উদ্বিগ্নতা, অসততা, একাকিত্বতা, দোষী বোধ ইত্যাদি হতে পারে। তাদের মধ্যে বাইরে যাওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে তাদের মধ্যে বিভিন্ন রকম মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।
অধ্যাপক ডা. এরিখ সিগম্যান তাঁর গবেষণায় বলেছেন যে, অনেক সময় হঠাৎ করে এই মোবাইল ডিভাইস তুলে নিলে তাদের মধ্যে উইথড্রয়াল সিম্পটমস আসতে পারে। ফলে তারা মোবাইল থেকে সহজেই বিরত থাকতে পারে না বা মোবাইল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে পারে না।
মোবাইল ফোন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে দুই থেকে পাঁচ বছরের শিশুরা। একটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের উপযুক্ত সময় প্রথম পাঁচ বছর।
মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ হলো শিশুর ক্রমে ক্রমে এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে শিশুর কথা বলতে শেখা, হাঁটাচলা শেখা এবং স্বাভাবিক বুদ্ধির বিকাশ হওয়া। আর এই সময় শিশুর একদিকে দীর্ঘ সময়ে মোবাইল গেম খেলা, ইউটিউব দেখা; অন্যদিকে স্বাভাবিক উদ্দীপনামূলক খেলাধুলা না করায় শিশুর স্নায়বিক বিকাশ ভীষণভাবে ব্যাহত হয়। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ নির্ভর করে পরিবেশ ও অন্য শিশুদের সঙ্গে শিশুর ভাবের আদান—প্রদানের ওপর। বলা হয়, শিশু শেখে দেখতে দেখতে এবং অন্যদের সঙ্গে খেলতে খেলতে।
অধিক সময় শিশু মোবাইল ডিভাইসের সংস্পর্শে থাকায় মা—বাবার সঙ্গে শিশুর সামাজিক যোগাযোগ এবং সমবয়সি শিশুর সঙ্গে খেলাধুলা—মেলামেশা একেবারেই কমে যায়।
এ ক্ষেত্রে গবেষকরা শিশুর বিকাশের প্রারম্ভে অত্যধিক মোবাইল ব্যবহার শিশুর মস্তিষ্কের গঠনপ্রকৃতির ভিন্নতার কথাও উল্লেখ করেছেন।
বিজ্ঞানী ডি এস্কিসটাকিস বলেছেন, শিশু অবস্থায় অতিমাত্রায় মোবাইল ফোন এবং টিভি দেখা শিশুদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে অতিমাত্রায় চঞ্চলতা দেখা দিতে পারে। বিজ্ঞানী ডি এ থমসন বলেছেন, অতিমাত্রায় মোবাইল, টেলিভিশনে আসক্তি এবং ঘুমের সময় কমে যাওয়া শিশুদের বিকাশের বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস ও টেলিভিশন কমিটি শিশুদের ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
- দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সের শিশুরা সারা দিনে এক—দুই ঘণ্টা স্ক্রিন দেখতে পারবে, কিন্তু সেটি অবশ্যই মানসম্মত অনুষ্ঠান হতে হবে।
- দুই বছরের কম বয়সি শিশুদের হাতে মোবাইল দেওয়া অনুৎসাহিত করা হয়েছে।
- শিশুদের বেডরুম থেকে টেলিভিশন সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
তারা শিশু বিকাশের ক্ষেত্রে কিছু উদ্দীপনাকে উৎসাহ প্রদান করছেন, যেমন— শিশুর সঙ্গে কথা বলা, গল্প করা, ছড়া বলা, গান করা ইত্যাদি।
শিশুদের মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার প্রতিরোধে অভিভাবকের করণীয় :
- মা—বাবার সচেতন হওয়াটাই শিশুর মোবাইল ব্যবহার কমাতে পারে।
- শিশুদের মোবাইল বাদ দিয়ে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে।
- সৃজনশীল কাজে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, যেমন— ছবি অঁাকা, গল্প করা, গান করা, পাজল খেলা, লুডু খেলা ইত্যাদি।
- মা—বাবাকে সম্ভব হলে শিশুদের সঙ্গে এসব খেলায় অংশগ্রহণও শিশুর মোবাইল ব্যবহার কমাতে পারে।
শিশুর অতিমাত্রায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের প্রভাব :
- শিশুর সামাজিক যোগাযোগ ও শারীরিক কসরত কমে যাওয়া, আচরণগত অসুবিধা, অসামাজিকতা, অতিচঞ্চলতা ও হিংসাত্মক আচরণ।
- শিশুর স্বাভাবিক স্নায়ুবিক বিকাশ কমে যাওয়া।
- শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ—প্রত্যঙ্গের সমস্যা, যেমন-চক্ষু সমস্যা, মাথাব্যথা ইত্যাদি। [সূত্র : কালের কন্ঠ অন-লাইন]
অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে যেসব প্রাকৃতিক উপাদান
ব্যাকটেরিয়ার কারণে হওয়া সংক্রমণ দূর করতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক সংক্রমণের বৃদ্ধি কমিয়ে দেয় বা বন্ধ করে দেয়। ব্যাকটেরিয়া দিয়ে সংক্রমিত হলে চিকিৎসকরা আমাদের অ্যান্টিবায়োটিক দেন। তবে কিছু প্রাকৃতিক উপাদানও রয়েছে, যেগুলো অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। এই ভেষজ উপাদানগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই জানিয়েছে এসব প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর কথা।
১. হলুদ : হলুদের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান। এগুলো ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি ব্যাকটেরিয়ার কারণে হওয়া সংক্রমণ প্রতিরোধেও কাজ করে।
২. আদা : আদা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণে হওয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা প্রতিরোধে আদা খুব ভালো ঘরোয়া উপাদান।
৩. নিম : নিমের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান। এটি ব্রণ তৈরির ব্যাকটেরিয়াগুলোর সঙ্গে লড়াই করে, মুখগহ্বরের সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করে, ক্ষয় ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধ করে।
৪. মধু : মধুও আরেকটি চমৎকার অ্যান্টিবায়োটিক। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান। এটি ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হওয়াকে ব্যাহত করে।
৫. জলপাইয়ের তেল : জলপাইয়ের তেলও ব্যাকটেরিয়ার কারণে হওয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদান। এগুলো ত্বকের সংক্রমণ কমায়।
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় করণীয়
হরমোন আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। হরমোন আমাদের শরীরকে বলে কী করতে হবে এবং কী করতে হবে না। তাই জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য হরমোন অপরিহার্য। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা শরীরের বিভিন্ন কার্যাবলির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
বিভিন্ন কারণে এর ভারসাম্যহীনতা তৈরি হতে পারে। অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, আলো—বাতাসে না যাওয়া, শারীরিকভাবে সক্রিয় না থাকা, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ইত্যাদির ফলে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।
কিছু সহজ উপায়ের মাধ্যমে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখা যায় :
১. ঘি, বাদাম, বীজ হরমোন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই এগুলো নিয়মিত খেতে হবে। বাদামে থাকে লিনোলেইক এসিড ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা হরমোন বৃদ্ধি করে।
২. প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন থাকতে হবে। প্রোটিন স্বাস্থ্যকর হরমোনের দেখভাল করে। ডিম, ডাল, সয়া, পনির, দইয়ে প্রোটিন আছে। তাই এই খাবারগুলো প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখতে হবে।
৩. সকালে উঠেই চা—কফি পানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরের জন্য ভালো নয়। সকালে খালি পেটে চা—কফি পান করলে শরীরে অতিরিক্ত ইনসুলিন তৈরি হয়। যা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। তবে হারবাল উপাদান হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৪. তিলবীজ, কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখীর বীজ খনিজসমৃদ্ধ হয়, যা হরমোনের কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া উচ্চ অঁাশযুক্ত ফলমূল খেতে হবে। যেমন— কলা, আপেল, স্ট্রবেরি। রঙিন শাকসবজিও হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ।
৫. রাতের খাবার দ্রুত খেতে হবে। কারণ রাতে শরীরে হরমোন উৎপাদনের আদর্শ সময়। রাতের খাবার দেরি করে খেলে শরীরে হরমোন উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে।
[সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস; কালের কন্ঠ অন—লাইন]
বিবদমান দু’জনের মাঝে মীমাংসার প্রতিদান জান্নাত
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিয়াল্লাহু ‘আন্হু) থেকে বর্ণিত; রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রতি (সপ্তাহ) সোম ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত রাখা হয়। যে আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক করে না, এমন প্রত্যেক বান্দাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়Ñ তবে ঐ ব্যক্তি ব্যতীত যার সাথে তার ভাইয়ের দুশ্মনী, মনোমালিন্য ও বিবাদ রয়েছে। (আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে) বলা হয়- তারা উভয়ে আপোষ-মীমাংসা করে নিক। তারা উভয়ে আপোষ-মীমাংসা করে নিক। তারা উভয়ে আপোষ-মীমাংসা করে নিক। সহীহ মুসলিম-মা: শা:, হা: ৩৫/২৫৬৫
আপনার মন্তব্য1