রাসূলুল্লাহ (সা.)এর অমিয় বাণী
عَنْ عَائِشَةَ (رضي) عَنْ النَّبِيِّ (ﷺ) قَالَ مَا زَالَ يُوصِيْنِي جِبْرِيْلُ بِالْجَارِ حَتّٰى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ.
সরল অনুবাদ
“‘আয়িশাহ্ (রা.) রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি (ﷺ) বলেছেন, জিবরীল (আ.) প্রতিবেশী সম্পর্কে আমাকে অনবরত অসিয়ত করতে থাকেন। এমনকি আমার মনে হয়েছিল, হয়তো তিনি প্রতিবেশীকে সম্পদের উত্তারাধিকারী করে দিবেন।” ১৪
বর্ণনাকারীর পরিচয়
‘আয়িশাহ্ সিদ্দিকা (রা.) আবূ বকর সিদ্দিক (রা)’র কন্যা। তাঁর মাতার নাম উম্মে রুম্মান। তিনি ৬১৩/১৪ খ্রি. হিজরতের ৮/৯ বছর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। নবুওয়াতের দশম বছর হিজরতের তিন বছর পূর্বে শাওয়াল মাসে মুহাম্মদ মোস্তাফা (ﷺ)-এর সাথে তাঁর বিবাহ হয়। তখন তাঁর বয়স ছিল ৬/৭ বছর। মহানবী (ﷺ) তাঁর এই প্রিয়তমা স্ত্রীকে আদর করে হুমায়রাহ্ বলে ডাকতেন। তিনি নবী (ﷺ)-কে নয়টি বছর জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে ধন্য হয়েছিলেন। তিনি নবী থেকে বহু সংখ্যক হাদীস সংগ্রহ করেছিলেন এবং তা প্রচারও করে গেছেন। ‘আয়িশাহ্ একজন বড় ফিকহবীদ সাহাবিয়া ছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হতে যে ছয়জন সাহাবি সর্বাধিক সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি তাদের একজন। তাঁর সনদে ২২১০টি হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
‘আয়িশাহ্ সিদ্দিকা (রা.) ৫৭/৫৮ হি. সনে ৬৫/৬৭ বছর বয়সে ১৭ রমযান মঙ্গলবার রাতে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর অসিয়ত মোতাবেক রাতের অন্ধকারে জান্নাতুল বাকীতে তাঁকে দাফন করা হয়।
হাদীসের ব্যাখ্যা
প্রতিবেশী মানবসমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ফলে ইসলামে প্রতিবেশীর হক্বকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আলোচ্য হাদীসে প্রতিবেশীর গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে রাসূল (ﷺ) বলেছেন যে, জিবরীল (আ.) প্রতিবেশী সম্পর্কে আমাকে এত বেশি বলেছে যে, মনে হচ্ছিল প্রতিবেশীকে উত্তরাধীকারীই বানিয়ে দেবে।
মহান আল্লাহর ‘ইবাদত ও তার সাথে কাউকে শরিক না করা : এই বিধানের সাথে প্রতিবেশীর বিষয়টিও আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন। একই আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের হক্ব বিষয়ে আলোচনা করেছেন তার মধ্যে রয়েছে মাতা-পিতার হক্ব, আত্মীয়-স্বজনের হক্ব, ইয়াতীমের হক্ব ইত্যাদি। এসব গুরুত্বপূর্ণ হক্বের সাথে প্রতিবেশীর হক্বকে উল্লেখ করা থেকেই বুঝা যায়, প্রতিবেশীর হক্বকে আল্লাহ তা‘আলা কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তা রক্ষা করা আমাদের জন্য কতটা জরুরি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَاعْبُدُوْا اللهَ وَلَا تُشْرِكُوْا بِه شَيْئًا وَّبِالْوَالِدَيْنِ اِحْسَانًا وَّبِذِى الْقُرْبٰـى وَالْيَتٰمٰى وَالْمَسَاكِيْنِ وَالْجَارِ ذِى الْقُرْبٰى وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالجَنْۢبِ وَابْنِ السَّبِيْلِ وَمَا مَلَكَتْ اَيْمَانُكُمْ اِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ مَنْ كَانَ مُخْتَالًا فَخُوْرًا
“তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদত করবে এবং কোনো কিছুকে তাঁর শরিক করবে না এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, নিকট-প্রতিবেশী, দূর-প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক, অহংকারীকে।” ১৫
কারা আমাদের প্রতিবেশী?
আমাদের চারপাশে বসবাসকারী পরিবারসমূহের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে একেকটি প্রতিবেশীক পরিমণ্ডল। তবে কতটি পরিবার সমন্বয়ে এ পরিমণ্ডল গড়ে ওঠে; এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে হাসান বাসরী (রাহি.) বলেন :
عَنِ الْحَسَنِ؛ أَنَّهُ سُئِلَ عَنِ الْجَارِ؟ فَقَالَ : أَرْبَعِيْنَ دَارًا أَمَامَهُ، وَأَرْبَعِيْنَ خَلْفَهُ، وَأَرْبَعِيْنَ عَنْ يَمِيْنِهِ، وأربعين عن يساره.
সামনে-পিছনে এবং ডান-বাম থেকে চল্লিশটি করে মোট ১৬০টি পরিবার সমন্বয়ে একটি প্রতিবেশীক পরিমণ্ডল গড়ে ওঠে এবং উক্ত ১৬০টি পরিবার একটি প্রতিবেশীর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। আল্লামা নাসিরুদ-দীন আলবানী (রাহি.) বর্ণনাটিকে হাসান (উত্তম) বলেছেন। ১৬
ইবনু শিহাব যুহরী রাসূল (ﷺ) থেকে মুরসাল... সূত্রে বর্ণনা করেন, চল্লিশটি পরিবার প্রতিবেশীর অন্তর্ভুক্ত। ইবনু শিহাবকে বলা হলো কীভাবে চল্লিশটি ঘর গণনা করা হবে? তিনি বললেন, চতুর্দিক থেকে চল্লিশটি করে মোট ১৬০টি পরিবার এর অন্তর্ভুক্ত। এক কথায় বলা যায়, আমাদের বসতবাড়ির চতুর্দিক হতে ১৬০টি পরিবার মিলে গড়ে ওঠে প্রতিবেশীক পরিমণ্ডল। বিখ্যাত আরবী অভিধানবীদ আল্লামা ইবনুল মানযূর (রা.) বলেন,
وهو مَنْ جاورك جوارًا شرعيًا سواء كان مسلمًا أو كافرًا، برًا أو فاجرًا، صديقًا أو عدوَّا، محسناً أو مسيئاً، نافعًا أو ضارًا، قريبًا أو أجنبيًا، بلديَّاً أو غريبًا.
‘প্রতিবেশী হচ্ছে যে ব্যক্তি আইনত তোমার পার্শ্বে অবস্থান করছে, সে মুসলিম হোক বা কাফের, পুণ্যবান হোক বা পাপী, বন্ধু হোক বা শত্রু, দানশীল হোক বা কৃপণ, উপকারী হোক বা অনিষ্টকারী, আত্মীয় হোক বা অনাত্মীয়, দেশী হোক বা বিদেশী। ১৭
প্রতিবেশীর প্রকার
প্রতিবেশী তিন প্রকার। যথা—
১. এমন প্রতিবেশী যে নিকটাত্মীয়, মুসলিম ও প্রতিবেশী। এক্ষেত্রে তার জন্যে রয়েছে তিনটি হক্ব বা অধিকার। অর্থাৎ- নিকটাত্মীয়ের অধিকার, মুসলিমের হক্ব বা অধিকার এবং প্রতিবেশীর অধিকার।
২. এমন প্রতিবেশী যে মুসলিম ও প্রতিবেশী তবে তিনি নিকটাত্মীয় নন। এ ব্যক্তির রয়েছে দু’টি অধিকার, অর্থাৎ- মুসলিম হওয়ার অধিকার ও প্রতিবেশীর অধিকার।
৩. এমন প্রতিবেশী যার ১টি অধিকার রয়েছে। তিনি হলেন শুধু প্রতিবেশী। অর্থাৎ-তিনি অমুসলিম প্রতিবেশী এবং তার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কও নেই। এ ব্যক্তির রয়েছে শুধু প্রতিবেশীর অধিকার। অমুসলিম প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করতে হবে, তাদেরকে কষ্ট দেওয়া যাবে না। তবে তাদের সাথে ঐরূপ সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না, যার ফলে বিলম্বে হলেও মুসলিমের পরিবারের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। ১৮
প্রতিবেশীর গুরুত্ব
রাসূলে কারিম (ﷺ) বলেছেন জিবরিল (আ.) প্রতিবেশী সম্পর্কে অব্যাহতভাবে তাগিদ দিয়েছেন। আমি ধারণা করেছিলাম যে প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকার স্বত্ব দেওয়া হবে। রাসূল (ﷺ) বলেন :
عَنْ عَائِشَةَ (رَضِيَ اللهُ عَنْهَا) عَنْ النَّبِيِّ (ﷺ) قَالَ مَا زَالَ يُوْصِيْنِيْ جِبْرِيْلُ بِالْجَارِ حَتّٰى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ.
“‘আয়িশাহ্ (রা.) রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি (ﷺ) বলেছেন, জিবরীল (আ.) প্রতিবেশী সম্পর্কে আমাকে অনবরত অসিয়ত করতে থাকেন। এমনকি আমার মনে হয়েছিল, হয়তো তিনি প্রতিবেশীকে সম্পদের উত্তারাধিকারী করে দিবেন।” ১৯
অনেক সময় দেখা যায় আত্মীয় স্বজনের আগে প্রতিবেশীই সুখে দুঃখে খোঁজ খবর নিতে পারে। তাই প্রতিবেশীর ভূমিকা অনেক বেশি। সঠিক প্রতিবেশী নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। বলা হয়ে থাকে ঘর কেনার আগে প্রতিবেশী কে তা তালাশ করো। ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়ার ঘটনায় বড় শিক্ষা রয়েছে। তাকে যখন জুলুম নির্যাতন চালানো হচ্ছিল তিনি মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলেন,
رَبِّ ابْنِ لِيْ عِنْدَكَ بَيْتًا فِى الْجَنَّةِ وَنَجِّنِيْ مِنْ فِرْعَوْنَ وَعَمَلِهِ وَنَجِّنِيْ مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِيْنَ
“হে আমার প্রতিপালক! তোমার সন্নিধানে জান্নাতে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করো এবং আমাকে উদ্ধার করো ফিরআউন ও তার দুষ্কৃতি হতে এবং আমাকে উদ্ধার করো জালিম সম্প্রদায় হতে।” ২০
এই দু‘আ থেকে আমাদের জন্য শিক্ষা হচ্ছে সঠিক প্রতিবেশী বাছাই করার চেষ্টা করা এবং আল্লাহর কাছে দু‘আ করা। কারণ প্রতিবেশীর ছেলে সন্তানদের আচরণ আপনার ছেলে সন্তানের উপর পড়বে। ভালো প্রতিবেশী ভালো কাজে উপদেশ দেয়। ভালো ব্যবহার করে। আর প্রতিবেশী খারাপ হলে অনেক দুশ্চিন্তার কারণ হয়।
প্রতিবেশীর প্রতি আমাদের করণীয়
প্রতিবেশীর জানাযায় অংশগ্রহণ : এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের যে হক্ব রয়েছে তন্মধ্যে অন্যতম হলো কেউ ইন্তিকাল করলে তার জানাযায় অংশগ্রহণ করা। রাসূল (ﷺ) বলেন,
حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ خَمْسٌ رَدُّ السَّلَامِ، وَعِيَادَةُ الْمَرِيْضِ، وَاتِّبَاعُ الْجَنَائِزِ، وَإِجَابَةُ الدَّعْوَةِ، وَتَشْمِيْتُ الْعَاطِسِ.
“এক মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের হক্ব পাঁচটি। সালামের জওয়াব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাযায় শরীক হওয়া, আহবানে সাড়া দেওয়া, হাঁচির জবাব দেওয়া।” ২১
প্রতিবেশীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা : সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে ও সুখী-সমৃদ্ধিশালী জীবন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রতিবেশীর সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করা। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে’।
প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত না হওয়া : প্রতিবেশীর সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা বা ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হওয়া অনুচিত। কেননা এতে উভয়ের মাঝে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ (ﷺ) قَالَ : لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ.
“আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ নয় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” ২২
মহানবী (ﷺ)-এর মুখনিঃসৃত বাণী থেকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রতিবেশীকে সম্মান করা ও নিজের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখা ঈমানের পূর্বশর্ত। যে ব্যক্তি এ শর্ত পালনে ব্যর্থ হবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। নবী (ﷺ) আরো বলেন :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ (ﷺ) قَالَ وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ قَالُوْا وَمَا ذَاكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ الْجَارُ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَا بَوَائِقُهُ قَالَ شَرُّهُ.
“আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহর শপথ! সে মু’মিন নয়! আল্লাহর শপথ! সে মু’মিন নয়! আল্লাহর শপথ! সে মু’মিন নয়! সাহাবিগণ (রা.) বললেন : হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! সে ব্যক্তিটি কে? তিনি (ﷺ) বললেন, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট হতে নিরাপদ নয়।” ২৩
প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়া : প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া ও নির্যাতন করে গৃহত্যাগে বাধ্য করা অতি বড় গুনাহের কাজ। সাওবান (রা.) প্রায়ই বলতেন, যে প্রতিবেশী তার কোনো প্রতিবেশীকে নির্যাতন করে বা তার সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করে যাতে সে ব্যক্তি গৃহত্যাগে বাধ্য হয়, সে ব্যক্তি নিশ্চিত ধ্বংসের মধ্যে পতিত হয়।
প্রতিবেশীকে উপহার দেওয়া ও তুচ্ছ না ভাবা : প্রতিবেশীকে উপহার দেওয়ার মাধ্যমে পরস্পরের মাঝে সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়। কিন্তু মানুষ এখন এতো বেশি আত্মকেন্দ্রিক ও ব্যক্তিসর্বস্ব হয়ে পড়েছে যে, ঘরের দরজা বন্ধ করে চুপিচুপি খেতেই বেশি অভ্যস্ত। প্রতিবেশীকে কিছু দেয়া তো দূরের কথা, বাসার অতিথিদেরকে এককাপ চা দিয়ে আপ্যায়ন করার সৌজন্যতাও ভুলতে বসেছে। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অন্যকে কিছু দিতে নারাজ। এ জন্যে অনেকেই কৃপণতা মুখ্য হিসেবে দেখলেও বস্তুতপক্ষে অহম ও আত্মম্ভরিতাই এর মূল কারণ। প্রতিবেশী যদি অপেক্ষাকৃত দরিদ্র হয় তবে তুচ্ছজ্ঞান করেই তাদেরকে আপ্যায়ন বা উপঢৌকন থেকে বঞ্চিত করা হয়। আর যদি ধনী হয়, তবে কিছু পাবার আশায় অথবা নিজ স্বার্থ সংরক্ষণের জন্যে মেকি সৌজন্যতা দেখানো হয়। কেউ কেউ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আদর্শ অনুসরণে যৎসামন্য খাদ্য-পানীয় পাশের বাড়িতে উপঢৌকনস্বরূপ পৌঁছালেও গ্রহীতাগণও তা নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের সুরে অনেক কথাই বলে থাকে এবং মনোসংকীর্ণতার কারণেই মানুষ এরূপ বলে থাকে। এ লেনদেন যেহেতু মহিলাদের মধ্যে হয়ে থাকে সে জন্যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মহিলাদেরকে সতর্ক করে বললেন :
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ (رضي)، عَنِ النَّبِيِّ (ﷺ) قَالَ : يَا نِسَاءَ المُسْلِمَاتِ، لَا تَحْقِرَنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا، وَلَوْ فِرْسِنَ شَاةٍ.
আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত; রাসূল (ﷺ) বলেছেন, হে মুসলিম মহিলাগণ! কোনো প্রতিবেশীনী যেন তার অপর প্রতিবেশীনীর উপঢৌকনকে তুচ্ছ মনে না করে; যদিও তা ছাগলের পায়ের ক্ষুর হয়। ২৪
অনেকের মনে এ প্রশ্ন জাগতে পারে যে, যেহেতু চতুর্দিক হতে ১৬০টি পরিবার প্রতিবেশী বলে গণ্য, সে ১৬০টি পরিবারকে উপঢৌকন পাঠানো কীভাবে সম্ভব? এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ : قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ، إِنَّ لِيْ جَارَيْنِ، فَإِلَى أَيِّهِمَا أُهْدِيْ؟ قَالَ : إِلَى أَقْرَبِهِمَا مِنْكِ بَابًا.
‘আয়িশাহ্ (রা.) রাসূল (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (রা.)! আমার দু’জন প্রতিবেশী আছে (যদি দু’জনকেই উপঢৌকন দেয়া সম্ভব না হয়, তবে) আমি তাদের মধ্যে কার নিকট উপঢৌকন পাঠাবো? তিনি (ﷺ) বললেন, যার দরজা তোমার বেশি নিকটবর্তী, তার কাছে।২৫ অর্থাৎ- সামর্থ্য অনুযায়ী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিবেশীদের মাঝে উপহার-উপঢৌকন বিনিময় করতে হবে; এর ফলে পারস্পরিক হৃদ্যতা বৃদ্ধি পাবে, এক পরিবারের সাথে অন্য পরিবারের ভালোবাসার সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে।
প্রতিবেশীর বাড়িতে খাবার পৌঁছানো : প্রতিবেশী যে ধর্মেরই হোক না কেন সবাই উত্তম আচরণ পাওয়ার অধিকার রাখে। বাড়িতে ভালো কোনো খাদ্য বা তরকারি রান্না হলে তাতে প্রতিবেশীকে শরিক করা রাসূল (ﷺ)-এর নির্দেশ। হাদীসে এসেছে
عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ (ﷺ) : يَا أَبَا ذَرٍّ إِذَا طَبَخْتَ مَرَقَةً، فَأَكْثِرْ مَاءَهَا، وَتَعَاهَدْ جِيْرَانَكَ.
আবূ যার (রা.) হতে বর্ণিত; রাসূল (ﷺ) বললেন, হে আবূ যার! যখন তুমি ঝোল (তরকারি) রান্না করবে, তখন তাতে পানির পরিমাণ বেশি দাও এবং তোমার প্রতিবেশীর প্রতি খেয়াল রাখো। ২৬
প্রতিবেশীকে কর্যে হাসানা দেওয়া : প্রতিবেশী কখনও সমস্যায় পড়লে কর্যে হাসানা দিয়ে তাকে সাহায্য করা উচিত। তাকে কর্যে হাসানা দিয়ে সাহায্য করলে আল্লাহ তা‘আলা সাহায্যকারীকেও সাহায্য করবেন। এ মর্মে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا نَفَّسَ اللهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللهُ فِىْ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَمَنْ يَسَّرَ عَلٰى مُعْسِرٍ يَسَّرَ اللهُ عَلَيْهِ فِىْ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَاللهُ فِىْ عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِىْ عَوْنِ أَخِيْهِ.
‘যে ব্যক্তি কোনো মু’মিনের পার্থিব দুঃখ-কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ ক্বিয়ামতে তার দুঃখ-কষ্ট দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোনো সংকটাপন্ন ব্যক্তির সংকট নিরসন করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার দুনিয়া ও আখিরাতের যাবতীয় সংকট নিরসন করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গোপন করবে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। আর আল্লাহ তা‘আলা ততক্ষণ পর্যন্ত বান্দাকে সাহায্য করে থাকেন, যতক্ষণ বান্দা নিজ ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে।’ ২৭
প্রতিবেশীর কষ্টে কৌশলী হওয়া : কোনো ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে কষ্ট দিলে তার প্রতিকার কৌশলে করা উচিত। এ মর্মে হাদীসে এসেছেÑ আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)!
إِنَّ لِيْ جَاراً يُؤْذِيْنِيْ، فَقَالَ : اِنْطَلِقْ. فَأَخْرِجْ مَتَاعَكَ إِلَى الطَّرِيْقِ. فَانْطَلَقَ فَأَخْرَجَ مَتَاعَهُ، فَاِجْتَمَعَ النَّاسُ عَلَيْهِ، فَقَالُوْا : مَا شَأْنُكَ؟ قَالَ : لِيْ جَارٌ يُؤْذِيْنِيْ، فَذَكَرْتُ لِلنَّبِيْ (ﷺ) فَقَالَ : اِنْطَلِقْ. فَاَخْرُجْ مَتَاعَكَ إِلَى الطَّرِيْقِ فَجَعَلُوْا يَقُوْلُوْنَ : اَللّٰهُمَّ اَلْعِنْهُ، اَللّٰهُمَّ أَخْزِهِ، فَبَلَغَهُ، فَأَتَاهُ فَقَالَ : اِرْجِعْ إِلَى مَنْزِلِكَ، فَوَاللهِ! لَا أُوْذِيْكَ.
অর্থাৎ- আমার এক প্রতিবেশী আমাকে পীড়া দেয়। তিনি বললেন, যাও, তোমার গৃহ-সামগ্রী রাস্তায় বের করে রাখো। সে ব্যক্তি তখন ঘরে গিয়ে তার গৃহসামগ্রী রাস্তায় বের করে রাখল। এতে তার পাশে লোকজন জড়ো হয়ে গেল। তারা জিজ্ঞেস করল, তোমার কি হয়েছে? সে বলল, আমার প্রতিবেশী আমাকে পীড়া দেয়। আমি তা নবী করীম (ﷺ)-কে বললে তিনি বললেন, যাও, ঘরে গিয়ে তোমার গৃহসামগ্রী রাস্তায় বের করে রাখো। তখন তারা সেই প্রতিবেশীটিকে ধিক্কার দিতে দিতে বলতে লাগল, হে আল্লাহ! এর উপর তোমার অভিসম্পাত হোক। হে আল্লাহ! তাকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করো। এ কথা ঐ প্রতিবেশীর কানে গেল এবং সে সেখানে উপস্থিত হলো। সে তখন বলল, তুমি তোমার ঘরে ফিরে যাও। আল্লাহর কসম! আর কখনো আমি তোমাকে পীড়া দেব না’। ২৮
প্রতিবেশীর মান-সম্মানের প্রতি লক্ষ্য রাখা : প্রতিবেশীর মান-সম্মানের প্রতি লক্ষ্য রাখা যেমন জরুরি, তেমনি মাল-সম্পদ হিফাযত করাও অবশ্য কর্তব্য। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদা তার সাহাবিগণকে ব্যভিচার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন, (তা কেমন? উত্তরে) তারা বললেন, হারাম; আল্লাহ ও তার রাসূল তা হারাম করেছেন। তখন তিনি বললেন, কোনো ব্যক্তি দশজন নারীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হলেও তা তার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া অপেক্ষা লঘুতর (পাপ)। অতঃপর তিনি বললেন, কোনো ব্যক্তির দশ ঘরের লোকজনের বস্তুসামগ্রী চুরি করা তার প্রতিবেশীর ঘরে চুরি করার চেয়ে লঘুতর।
প্রতিবেশীর খোঁজ-খবর নেওয়া : দুঃখ-দৈন্য, অভাব-অনটন মানব জীবনের নিত্যসঙ্গী। এসব দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে পরীক্ষা করেন। আবার ধনী-দরিদ্রও আল্লাহ তা‘আলা করে থাকেন। সুতরাং দরিদ্র প্রতিবেশীর খোঁজ-খবর নেওয়া আবশ্যক। প্রতিবেশী অভুক্ত থাকলে তাকে খাদ্য না দিয়ে নিজে পেট পুরে খাওয়া ঈমানদারের পরিচয় হতে পারে না। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ওই ব্যক্তি পূর্ণ মু’মিন নয়, যে পেট পুরে খায় আর তার পাশেই তার প্রতিবেশী অভুক্ত থাকে।
প্রতিবেশীর দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা : মানুষ দোষ-ত্রুটির ঊর্ধে নয়। ভালো এবং মন্দগুণের সমন্বয়ে মানুষ। প্রতিবেশীর দোষ গোপন রাখা অবশ্য কর্তব্য। কেননা মুসলিম ভাইয়ের দোষ গোপন রাখলে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতে তার দোষ গোপন রাখবেন। রাসূল (ﷺ) বলেন,
لَا يَسْتُرُ اللهُ عَلٰى عَبْدٍ فِيْ الدُّنْيَا إِلَّا سَتَرَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কারো দোষ গোপন রাখে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা তার দোষ গোপন রাখবেন।’ ২৯
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ (ﷺ) "مَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللهُ فِيْ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ".
যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন করবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন। ৩০
অন্যত্র তিনি আরো বলেন,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ (ﷺ) قَالَ "مَنْ سَتَرَ عَوْرَةَ أَخِيْهِ الْمُسْلِمِ سَتَرَ اللهُ عَوْرَتَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَنْ كَشَفَ عَوْرَةَ أَخِيْهِ الْمُسْلِمِ كَشَفَ اللهُ عَوْرَتَهُ حَتّٰى يَفْضَحَهُ بِهَا فِيْ بَيْتِهِ".
ইবনু ‘আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন (অপরাধের) বিষয় গোপন রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার গুপ্ত (অপরাধের) বিষয় গোপন রাখবেন। আর যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন বিষয় ফাঁস করে দিবে, আল্লাহ তা‘আলা তার গোপন বিষয় ফাঁস করে দিবেন, এমনকি এই কারণে তাকে তার ঘরে পর্যন্ত অপদস্ত করবেন। ৩১
প্রতিবেশীর জমির আইল না ঠেলা : অনেক সময় এমন হয় যে দুই প্রতিবেশী তাদের বাড়ির সীমানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। যে প্রতিবেশীর শক্তি বেশি সে জোরপূর্বক নিজের সীমানা বাড়িয়ে নেয়। এটা বসতবাড়ির ক্ষেত্রে যেমন হয় ফসলের জমির প্রতিবেশীর সাথে আরও বেশি হয়। যাকে বলে ‘আইল ঠেলা’। সামান্য জমিন ঠেলে সে নিজের ঘাড়ে জাহান্নাম টেনে আনল। যতটুকু জমিন সে জবরদস্তি বাড়িয়ে নিলো সে নিজেকে তার চেয়ে সাতগুণ বেশি জাহান্নামের দিকে ঠেলে নিলো। হাদীসে এসেছে
্রمَنْ أخَذَ شِبْرًا مِنَ الْأَرْضِ ظُلْمًا، طُوِّقَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى سَبْعِ أَرَضِيْنَ.
“যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে এক বিঘত জমি দখল করল, কিয়ামতের দিন ঐ জমির সাত তবক পরিমাণ তার গলায় বেড়ি আকারে পরিয়ে দেওয়া হবে।” ৩২
উপসংহার
প্রতিবেশীদের মধ্যে জগড়া-বিবাদ থাকা ইসলাম কামনা করে না; বরং প্রতিবেশীরা পরস্পর সৌহার্দ ও সহমর্মিতার সাথে বসবাস করবেন, ইসলাম এটাই কামনা করে। আমরা প্রত্যেকে এক অপরের প্রতি সহযোগীতার হাত প্রসারিত না করলে, সমাজের শান্তি নষ্ট হয়ে যাবে। অশান্তিতে ভরে যাবে সমাজ তথা দেশ এবং সারা দুনিয়া। আমার দ্বারা আমার প্রতিবেশী যদি ভালো আচরণ না পায় তাহলে আমার ঈমানের পরিচয় কোথায়? আমার মধ্যে কতটুকু মনুষ্যত্ব আছে? প্রকৃত ঈমানদার মানুষের দ্বারা কখনো তার প্রতিবেশী কষ্ট পেতে পারে না। ❏
১৪.সহীহুল বুখারী- হা. ৬০১৪।
১৫.সূরা আন্ নিসা : ৩৬।
১৬.আল আদাবুল মুফরাদ- মাকতাবুশ শামেলাহ, ১০৯/৮০।
১৭.লিসানুল আরব- ৪/১৫৩-৫৪ পৃ.।
১৮.আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব- ১/২৬৭ পৃ.।
১৯.সহীহুল বুখারী- হা. ৬০১৪।
২০.সূরা আত্ তাহরীম : ১১।
২১.সহীহ মুসলিম; মিশকা-তুল মাসা-বীহ- হা. ১৫২৫।
২২.সহীহ্ মুসলিম- হা. ৭৩।
২৩.সহীহুল বুখারী- হা. ৬০১৬; মুসনাদ আহমাদ- হা. ১৫৯৩৫।
২৪.সহীহুল বুখারী- হা. ২৫৬৬; সহীহ মুসলিম- হা. ১০৩০; জামে‘ আত্ তিরমিযী- হা. ২১৩০।
২৫.সহীহুল বুখারী- হা. ৬০২০; সুনান আবূ দাঊদ- হা. ৫১৫৫।
২৬.সহীহ মুসলিম- হা. ২৬২৫; সুনান ইবনু মাজাহ্- হা. ৩৩৬২।
২৭.সহীহ মুসলিম- হা. ৭০২৮; মিশকা-তুল মাসা-বীহ- ‘কিতাবুল ইলম’, ২০৪।
২৮.আল আদাবুল মুফরাদ- হা. ১২৪।
২৯.সহীহ মুসলিম- হা. ৪৬৯১।
৩০.সুনান ইবনু মাজাহ্- হা. ২৫৪৪, সনদ সহীহ।
৩১.ইবনু মাজাহ্- হা. ২৫৪৬; সহীহ আত্ তারগীব- হা. ২৩৩৮।
৩২.সহীহ মুসলিম- হা. ১৬১১; সহীহুল বুখারী- হা. ৩১৯৮।
আপনার মন্তব্য1