সাময়িক প্রসঙ্গ
অধিক সম্পদ লাভের মোহ : অন্তরের ব্যাধি
শাইখ মুহাম্মদ আবদুশ্ শাকূর

আল্লাহ তা‘আলার অমিয় বাণী

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ

﴿أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ ۝ حَتّٰى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ ۝ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُوْنَ ۝ ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُوْنَ ۝ كَلَّا لَوْ تَعْلَمُوْنَ عِلْمَ الْيَقِيْنِ ۝ لَتَرَوُنَّ الْجَحِيْمَ ۝ ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِيْنِ ۝ ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيْمِ﴾

সরল বাংলায় অনুবাদ

দয়াময় পরম দয়ালূ মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি

“(১) তোমাদেরকে একে অপরের তুলনায় অধিক সুখ—সম্পদ লাভের চিন্তা চরম ভোগান্তির মধ্যে ফেলে রেখেছে। (২) এমনকি (এ চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে) যতক্ষণ না তোমরা কবর পর্যন্ত উপস্থিত হচ্ছো। (৩) এটি কখনও ঠিক নয়, শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে। (৪) অতঃপর এটি কখনও উচিত নয়, শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে। (৫) কখনো নয় তোমরা যদি সাবধান হয়ে নিশ্চিত জ্ঞান রাখতে (এমন কাজ করতে না)। (৬) সাবধান, অচিরেই তোমরা জাহান্নাম দেখবে। (৭) আবার শুনো, তোমরা সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা সহকারে তা দেখতে পাবে। (৮) এরপর অবশ্যই সেদিন তোমাদের প্রদত্ত নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাস করা হবে।” 

সূরার নামকরণ

এ সূরার প্রথম আয়াতের আত্ তাকা—সুর (التَّكَاثُرُ) শব্দটিকে উক্ত সূরার নাম রূপে গ্রহণ করা হয়েছে। আত্ তাকা—সুর অর্থ— আধিক্যের লালসা।

আলোচ্য বিষয়

এ সূরায় মানুষকে দুনিয়ার প্রতি অধিক ভালোবাসা ও বৈষয়িক স্বার্থ—সিদ্ধির অশুভ পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক ও সচেতন করা হয়েছে। এ অত্যধিক ভালোবাসা ও স্বার্থপূজার কারণে মানুষ মৃত্যুর পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত বেশী বেশী ধন—সম্পদ আহরণ ও সংরক্ষণে ব্যস্ত, পার্থিব লাভ, স্বার্থ উদ্ধার, ভোগ—বিলাস, প্রভাব—প্রতাপ, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব লাভ এবং তার মধ্যে প্রতিযোগিতামূলকভাবে একজন আরেকজনের চাইতে লাভের বেশি প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় এবং এ সব অর্জনের জন্য অহঙ্কারে মেতে উঠে। আর এই একটি চিন্তায় বিভোরতার কারণে তারা মশগুল হয়ে পড়ে যার ফলে অন্য কোনো উন্নত ও মানব কল্যাণে নিজেকে ব্যপৃত করতে পারে না। আল্লাহ পাক তাদেরকে সাবধান করে বলেন, যে সব পার্থিব নিয়ামত নিয়ে তোমরা ব্যস্ত এগুলো সব তোমাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। অথচ প্রতিটি নিয়ামত সম্পর্কে তোমাদেরকে আখিরাতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

নাযিল হওয়ার সময়কাল

আবূ হাইয়ান ও শাওকানী বলেন, সকল তাফসীরকারক একে মাক্কী সূরা হিসেবে গণ্য করেছেন। ইমাম সূয়ূতীর বক্তব্য হচ্ছেÑ মাক্কী সূরা হিসাবেই এটি বেশি খ্যাতি অর্জন করেছে। কিন্তু কিছু কিছু বর্ণনায় একে মাদানী সূরা বলা হয়েছে। ইমাম ইবনু হাতিম আবূ বুরাইদাহ্ ( )’র রিওয়ায়াত উদ্ধৃত করেছেন, তাতে বলা হয়েছেÑ বানী হারিসা ও বানী হার্স নামক আনসারদের দু’টি গোত্রের ব্যাপারে এ সূরাটি নাযিল হয়।

উভয় গোত্র পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতামূলকভাবে প্রথমে নিজেদের জীবিত লোকদের গৌরব গাঁথা বর্ণনা করে। তারপর তারা নিজেদের কবরস্থানে গিয়ে মৃত লোকদের গৌরব গাঁথা বর্ণনা করে। তাদের এরূপ উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের ফলেÑ أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ নাযিল হয়।

এ পর্যায়ে ইমাম বুখারী ও ইবনু জারীর উবাই ইবনু কা‘ব ( )’র একটি উক্তি উদ্ধৃত করেছেন। তাতে তিনি বলেছেনÑ আমরা রাসূল ( )—এর এ বাণীটিকে কুরআনের মধ্যে মনে করতাম। তাতে তিনি বলেছেন :

لَوْ أَنَّ لِابْنِ آدَمَ وَادِيَانِ مِنْ مَالٍ لَتَمَنَّى وَادِيًا ثَالِثًا وَلَا يَمْلَأُ جَوْفَ ابْنِ آدَمَ إِلَّا التُّرَابُ.

“আদম সন্তানের যদি দুই উপত্যকা সমান সম্পদ থাকে তারপরও সে তৃতীয় একটি উপত্যকা কামনা করবে এবং আদম সন্তানের পেট মাটি ব্যতিত পূর্ণ হবে না।”  এমনকি শেষ পর্যন্ত আল হাকুমুত তাকা—সুর সূরাটি নাযিল হয়।

উবাই ( ) মাদীনাতে মুসলমান হয়েছেন বলে এই হাদীসকে সূরা আত্ তাকা—সুরের মাদীনায় অবতীর্ণ হওয়ার স্বপক্ষে প্রমাণ হিসাবে পেশ করা হয়। কিন্তু উবাই ( )’র এই বক্তব্য থেকে সাহাবায়ে কেরাম কোন অর্থে রাসূল ( )—এর এই বাণীকে কুরআনের একটি আয়াত মনে করতেন না Ñএটা সুস্পষ্ট হয়নি। যদি তাঁরা একে কুরআনের একটি আয়াত মনে করতেন তাহলে এ কথা মেনে নেয়া যেতে পারে না। কারণ সাহাবীগণের সংখ্যক অংশ কুরআনের প্রতিটি হরফ সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। এ হাদীসকে কুরআনের আয়াত মনে করার মতো ভুল ধারণা তাঁরা কেমন করে পোষণ করতে পারেন? বস্তুতঃ মাদীনা তায়্যেবায় যারা মুসলমান হয়েছেন তাঁরা নাবী কারীম ( )—এর মুখে প্রথম এ সূরাটি শুনে মনে করেছেন, এই মাত্র বুঝি সূরাটি নাযিল হয়েছে। কবরের ‘আযাবের কথা উল্লেখ করে এ মাক্কী—মাদানীর মতানৈক্য দেখা দিয়েছে।

সকল মতানৈক্যের অবসান ঘটিয়ে মুফাসসিরগণের অধিকাংশই এই সূরাটি মাক্কী হওয়ার ব্যাপারে একমত। অধিকন্তু বিশিষ্ট মুফাস্সিরগণের মতে এটি শুধু মাক্কী সূরাই নয়; বরং মাক্কী জীবনের প্রথম দিকে অবতীর্ণ সূরাগুলোর অন্তর্ভুক্ত।

আয়াতের সংক্ষিপ্ত তাফসীর

﴿أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ﴾

“তোমাদের বেশি বেশি ও অপরের তুলনায় অধিক দুনিয়ার স্বার্থ লাভের মোহ গাফলতির মধ্যে ফেলে রেখেছে।”

ألهكم শব্দটির মূলে রয়েছে “লাহউন” لهو—এর আসল অর্থ— গাফলতি। যে সব কাজের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও আকর্ষণ এত বেশি বেড়ে যায় যে, সে তাতে লিপ্ত ও মগ্ন হয়ে অন্য অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ জিনিস থেকে গাফেল হয়ে পড়ে। সে ধরনের প্রতিটি কাজের জন্য আরবি ভাষায় এ শব্দটি বলা হয়ে থাকে।

(تَّكَاثُرُ) তাকাসুর শব্দের মূল (كَثْرت) কাসরাত। কাসরাত শব্দের অর্থ— দুনিয়ার প্রাচুর্য—আধিক্য লাভের প্রতিযোগিতা। আল হাকুম শব্দ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? সে কথা সুস্পষ্ট করে বলা হয়নি। অর্থের এ অস্পষ্টতার কারণে শব্দগুলোকে ব্যাপকতর অর্থে ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। তাই দুনিয়ার সমস্ত সুবিধা ও লাভ, ভোগ—বিলাসের দ্রব্য ভোগের সামগ্রী শক্তি ও কর্তৃত্বের উপকরণ বেশি বেশি অর্জন করার চেষ্টা চালানো এগুলো অর্জন করার জন্য একে অপরের চেয়ে অগ্রবর্তী হওয়ার চেষ্টা করা এবং এগুলোর প্রাচুর্যের কারণে অন্যের সাথে বড়াই ও বাহাদুরী করা ইত্যাদি এ অর্থের অন্তর্ভুক্ত। তারা মহান আল্লাহর নির্দেশ, আখিরাত চিন্তা, নৈতিক দায়িত্ব ও অধিকার আদায়ের ব্যাপারে নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে উদাসীন ও গাফেল থাকে। তারা কেবল নিজেদের জীবন—যাপনের মান উন্নয়নে ব্যস্ত। মানবতার মান কতটুকু নেমে যাচ্ছে সে চিন্তা তাদেরকে এতটুকুও ব্যতিব্যস্ত করে না তাদের চাই শুধু বেশি বেশি অর্থ ও টাকাকড়ি।

কোন পথে এ অর্থ অর্জিত হচ্ছে তার কোনো পরওয়াই তাদের নেই। তারা বিলাস দ্রব্য ও ভোগের সামগ্রী বেশি বেশি চায়। এই প্রবৃত্তি পূজায় লিপ্ত যারা তারা এ ধরণের আচার—আচরণের অশুভ পরিণতি থেকে সম্পূর্ণ গাফেল ও উদাসীন।

﴿حَتّٰى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ﴾

“এমনকি (এ চিন্তায় আচ্ছন্ন ও বিভোর হয়ে) তোমরা মৃত্যুর কোলে তথা কবর পর্যন্ত পেঁৗছে যাও।”

অর্থাৎ— সারাটা জীবন তোমরা এ প্রাচুর্য গড়ায় লিপ্ত ছিলে। এখন কবরে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। এখনও এই চিন্তা থেকে তোমাদের রেহাই নেই।

﴿كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُوْنَ﴾

“কখনো নয়, শীঘ্রই (অচিরেই) তোমরা জানতে পারবে।”

তোমরা ভুল ধারণার শিকার হয়েছ। বৈষয়িক সম্পদের প্রাচুর্য গড়ে অপরের চেয়ে অধিক অগ্রবর্তী হয়ে যাওয়াকেই উন্নতি ও সাফল্য মনে করে নিয়েছ। অথচ এটা মোটেই উন্নতি ও সাফল্য নয়। শীঘ্রই তোমরা এর অশুভ পরিণতি সম্পর্কে জানতে পারবে। এখানে শীঘ্রই অর্থ— আখিরাতেও হতে পারে।

কারণ আদি হতে অন্ত পর্যন্ত সময়কালব্যাপী যে সত্ত্বার দৃষ্টি প্রসারিত তাঁর কাছে কয়েক হাজার বা কয়েক লাখ বছর ও কালের সামান্য একটি অংশ মাত্র। আবার শীঘ্রই মৃত্যুও হতে পারে। কারণ কোনো মানুষ থেকে তার অবস্থান দূরে নয়। মানুষ সারা জীবন যে সব কাজের মধ্যে কাটিয়ে এসেছে সে মরে যাবার সাথে সাথে সেগুলো তার জন্য শুভ বা অশুভ পরিণামের বাহন ছিল কি—না তা তার কাছে একেবারে সুস্পষ্ট হয়ে যাবে।

﴿ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِيْنِ﴾

“আবার শুনো, তোমরা সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা সহকারে প্রত্যক্ষভাবে জাহান্নামকে দেখতে পাবে।”

হাশ্রের মাঠে জাহান্নামকে উপস্থিত করা হবে। সেই হাশ্রের ময়দানে জাহান্নাম থেকে উৎক্ষিপ্ত প্রজ্জলিত পাথরের বিরাট বিরাট খণ্ড জাহান্নামীদের হাতে, পায়ে ও গায়ে এসে পড়বে।

﴿ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيْمِ﴾

“তারপর অবশ্যই তোমাদেরকে সেইদিন এই নিয়ামতগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

মহান আল্লাহর আদালতে হিসাব নেওয়ার সময় দুনিয়ায় তোমরা বিভিন্ন পন্থায় অর্জিত ধন—সম্পদ ও নিয়ামত সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে। কোন পথে এ সকল সম্পদ অর্জন করেছ, আর কোন পথে ব্যয় করেছ তার পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে হিসাব নেয়া হবে। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছেÑ

আবূ হুরাইরাহ্ ( ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ( ) আবূ হুরাইরাহ্ ( ) ও ‘উমার ( )—কে বললেন : চলো, আমরা আবূ হায়সাম ইবনুত তায়্যিহান আনসারীর ওখানে যাই। তিনি তাঁদেরকে নিয়ে ইবনুত তায়্যিহানের খেজুর বাগানে গেলেন এবং একটি গাছের ছায়ায় বসলেন। আবুল হায়সাম এক ছড়া খেজুর এনে মেহমানদের সামনে রাখলেন। রাসূলুল্লাহ ( ) তাকে বললেন, তুমি নিজে খেজুরগুলো ছিড়ে একটা পাত্রে করে আনলে না কেন? তিনি বললেন, আমি চাচ্ছিলাম আপনারা নিজেরা পাকা খেজুরগুলো বেছে বেছে খাবেন। কাজেই তাঁরা খেজুর খেলেন এবং ঠাণ্ডা পানি পান করলেন।

খাওয়া—দাওয়া শেষ করে রাসূলুল্লাহ ( ) বললেন, সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ সমর্পিত, কিয়ামতের দিন যেসব নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এই, ঠাণ্ডা পানি ও মিষ্টি খেজুরও তার অন্তর্ভুক্ত।

এই হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, নিয়ামতের ব্যাপারে সেদিন জিজ্ঞাসাবাদ শুধু কাফিরদেরকে করা হবে না, সৎ মু’মিনদেরকেও করা হবে। আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়া তা‘আলা মানুষকে যে নিয়ামত দান করেছেন, সেগুলো গণনা করে শেষ করা যায় না। এমন অনেক নিয়ামত আছে, মানুষ যেগুলোর কোনো খবরই রাখে না। কুরআন মাজীদে বলা হয়েছেÑ

﴿وَإِنْ تَعُدُّوْا نِعْمَتَ اللهِ لَا تُحْصُوْهَا﴾

“যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামতগুলোর গণনা করতে থাকো তাহলে সেগুলো পুরাপুরি গণনা করতেও পারবে না।” 

আয়াতের শিক্ষাসমূহ

(১) পার্থিব সম্পদের প্রাচুর্য গড়ে তোলার জন্য প্রতিযোগিতা ও বাহাদুরি করা যাবে না।

(২) মহান আল্লাহর দেয়া নিয়ামতের স্বীকৃতি ও মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা কর্তব্য।

বাস্তবায়ন

উপর্যুক্ত দারসের আলোকে আমাদের জীবনকে গড়ে তোলার জন্য পার্থিব ধন—সম্পদ মহান আল্লাহর দেয়া নিয়ামত। এ নিয়ামতের আয় ও ব্যয়ের বৈধতার হিসাব মহান আল্লাহর আদালতে দেয়ার প্রস্তুতি থাকতে হবে। যাবতীয় নিয়ামতের মালিক একমাত্র আল্লাহ, এ স্বীকৃতি দিয়ে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতায় মাথা অবনত করতে হবে। 



সূরা আত্ তাকা-সুর : ১-৮।

মুসনাদ আহমাদ-হা. ১৩৮৭৩।

সূরা ইব্রা-হীম : ৩৪।


আপনার মন্তব্য1

ঢাকায় সূর্যোদয় : 6:06:38 সূর্যাস্ত : 6:08:21

সাপ্তাহিক আরাফাতকে অনুসরণ করুন

@সাপ্তাহিক আরাফাত