হাদীসুর রাসূল
দারসুল হাদীস
শাইখ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বাণী
عَنْ عَائِشَةَ (ঃ) أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ : ্রإِنَّ اللهَ تَعَالَى رَفِيْقٌ يُحِبُّ الرِّفْقَ وَيُعْطِيْ عَلٰى الرِّفْقِ مَا لَا يُعْطِيْ عَلٰى الْعُنْفِ وَمَا لَا يُعْطِيْ عَلٰى مَا سِوَاهُগ্ধ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ. وَفِيْ رِوَايَةٍ لَهُ : قَالَ لِعَائِشَةَ : ্রعَلَيْكِ بِالرِّفْقِ وَإِيَّاكِ وَالْعُنْفَ وَالْفُحْشَ إِنَّ الرِّفْقَ لَا يَكُوْنُ فِيْ شَيْءٍ إِلَّا زَانَهُ وَلَا يُنْزَعُ مِنْ شَيْء إِلَّا شانهগ্ধ.বঙ্গানুবাদ
‘আয়িশাহ্ (রাযী.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন : আল্লাহ তা‘আলা কোমল, তিনি কোমলতাকে ভালোবাসেন। আর আল্লাহ তা‘আলা কোমলতা দিয়ে যা প্রদান করেন কঠোরতা বা অন্য কোনো কিছু দিয়ে তা প্রদান করেন না। সহীহ মুসলিমের অপর বর্ণনায় রয়েছে- একদা রাসূলুল্লাহ (সা.) ‘আয়িশাহ্ (রাযী.)-কে বলেন : কোমলতা নিজের জন্য বাধ্যতামূলক করে নাও এবং কঠোরতা ও নির্লজ্জতা হতে আত্মরক্ষা করো। কারণ যাতে কোমলতা থাকে তার শোভা বৃদ্ধি হয়। আর যাতে কোমলতা থাকে না তা কদর্য হয়ে পড়ে।[১]
উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাযী.)’র জীবনী
‘আয়িশাহ্ (রাযী.)’র জন্ম ৬০৪ ঈসায়ী সালে। তাঁর পিতা আবূ বক্র সিদ্দীক (রাযি.) এবং তার মাতা উম্মু রুমান বিনতু আমির। বদর যুদ্ধের পর মহানাবী (সা.)-এর সাথে তাঁর বিবাহ বন্ধন সম্পাদিত হয়। উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাযী.) কুরআন, তাফসীর, হাদীস ও ফিকহের জ্ঞানে অসাধারণ জ্ঞানী ছিলেন। ইমাম যুহরী বলেন-
لَوْ جُمِعَ عِلْمُ عَائِشَةَ إِلَى عِلْمِ جَمِيْعِ النِّسَاءِ لَكَانَ عِلْمُ عَائِشَةَ أَفْضَلَ.
“যদি ‘আয়িশাহ্ (রাযী.)’র ‘ইল্ম একত্রিত করা হয় তবে সকল নারীর ‘ইল্মের চেয়ে সেগুলো শ্রেষ্ঠ হবে।”[২]
১৭ রামাযান ৫৮ হিজরীতে মাদীনাহ্ মুনাওয়ারায় তার মৃত্যু হয়।
হাদীসের মূল বক্তব্য
সকলের প্রতি কোমল ও নরম আচরণ মানব বৈশিষ্টের অন্যতম সেরা গুণ। আল্লাহ তা‘আলা অসীম দয়ার্দ্র ও নরম বলেই আমরা হাজার ভুল করেও তাঁর করুণার আশা করি। নরম হওয়া দ্বারা সকল কাজ সুন্দরভাবে আদায় করা যায় কঠোরতা দ্বারা যা কখনো সম্ভব হয় না। তাই আমাদের আচরণগত রুঢ়তা পরিহার করতে হবে।
হাদীসের ব্যাখ্যা
ইসলাম মহান আল্লাহর মনোনিত একমাত্র জীবন ব্যবস্থা। এ জীবন ব্যবস্থার অন্যতম দিক ও বৈশিষ্ট্য হলো মানবীয় আচরণগত সৌন্দর্য। সুন্দর ও সুশোভিত আচরণই ইসলামের কাঙ্খিত। অশোভন আচরণ, অশ্লীল বচন ইত্যাদি কোনোটাই ইসলামের নয়। আল্লাহ তা‘আলা কাজে-কর্মে এবং আচার-আচরণে সদাচারী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ করেন-
﴿وَأَحْسِنْ كَمَا أَحْسَنَ اللهُ إِلَيْكَ﴾
“তুমি সদাচারী ও অনুগ্রহশীল হও যেমনটি আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন।”[৩]
সাদাচারী এবং সৎকর্মশীলদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা অফুরন্ত পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
﴿إِنَّ رَحْمَتَ اللهِ قَرِيْبٌ مِنَ الْمُحْسِنِيْنَ﴾
“নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের অতি কাছে।”[৪]
সদাচারণ, বিনয় ও নম্রতার অশেষ পারিতোষিক সম্পর্কে প্রিয় নাবী (সা.) হৃদয় জুড়ানো সুসংবাদ দিয়েছেন-
مَنْ أُعْطِيَ حَظَّهُ مِنْ الرِّفْقِ فَقَدْ أُعْطِيَ حَظَّهُ مِنْ خَيْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَصِلَةُ الرَّحِمِ وَحُسْنُ الْخُلُقِ وَحُسْنُ الْجِوَارِ يَعْمُرَانِ الدِّيَارَ وَيَزِيْدَانِ فِيْ الْأَعْمَارِ.
“কেউ নম্রতা ও কোমলতা লাভ করলে সে দুনিয়া ও আখিরাতের প্রাপ্য সকল কল্যাণই লাভ করলো। আর রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সুন্দর আচরণ বাড়ি-ঘর ও জনপদে বরকত আনয়ন করে এবং আয়ু বৃদ্ধি করে।”[৫]
মিষ্টি-মধুর কথা এবং নরম-কোমল আচরণ মহান আল্লাহর বিরাট নি‘আমত এবং অনুকম্পা। এর অভাবে কোনো মানুষের জীবনের ‘আসল উদ্দেশ্য ব্যহত হয়। আচরণগত কোমলতা বঞ্চিত মানুষ সমাজে এক সময় অবাঞ্চিত ও ঘৃণিত হয়ে উঠে। আল্লাহ তা‘আলা তার প্রিয় রাসূলের বিষয়ে বিষয়টির অসাধারণ গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন :
﴿فَبِمَا رَحْمَةٍ مِنَ اللهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيْظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِيْ الْأَمْرِ﴾
“আল্লাহর অনুগ্রহে তুমি তাদের প্রতি কোমল হৃদয় সম্পন্ন হয়েছিলে; যদি তুমি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতে তাহলে তারা তোমার চারপাশ থেকে সরে যেত। সুতরাং তুমি তাদেরকে ক্ষমা করো এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করো।”[৬]
সদাচারণের অন্যতম দিক হলো মানুষকে অভাব ও নিঃসতার বেলায় সহায়তা করা, বাগ ও ক্রোধকে সংবরণ করে মানুষকে ক্ষমা করতে জানা। মানুষের জন্য অকুন্ঠচিত্ত দয়া পরবশ হওয়া আর মু’মিনদের জন্য ভালোবাসার অকৃত্রিম ডানাকে মোলায়েম করে বিছিয়ে দেয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
﴿الَّذِيْنَ يُنْفِقُوْنَ فِيْ السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِيْنَ الْغَيْظَ وَالْعَافِيْنَ عَنِ النَّاسِ وَاللهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِيْنَ﴾
“যারা সচ্ছলতা ও অভাবের মধ্যে ব্যয় করে এবং রাগ দমন করে এবং মানুষকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে; আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালোবাসেন।”[৭]
মহানাবী (সা.) ইরশাদ করেছেন-
্রلَا يَرْحَمُ اللهُ مَنْ لَا يَرْحَمُ النَّاسَগ্ধ.
“আল্লাহ তা‘আলা সেই ব্যক্তিকে দয়া করেন না, যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে না।”[৮]
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন :
﴿وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِلْمُؤْمِنِيْنَ﴾
“তুমি মু’মিনদের জন্য তোমার পক্ষপুট (ডানা) অবনমিত করো।”[৯]
সত্যিকার জান্নাতী মু’মিন হতে গেলে আচরণে সদাচারী হতে হবে। কথায় কথায় ক্রোধ প্রদর্শন, অন্যকে গালমন্দ বা কটুক্তি করা, রুক্ষ এবং কর্কশ মেজাজ দেখানো ইত্যাদী মোটেও চলবে না। মেজাজের রুক্ষতা, অন্যের প্রতি গালি বর্ষণ, উত্তম আচরণ এসবই মহান আল্লাহর কাছে ঘৃণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন :
্রلَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ الْجَوَّاظُ وَلَا الْجَعْظَرِيُّগ্ধ.
“কঠোর ও রুক্ষ মেজাজের মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”[১০]
আবূ দারদা (রাযি.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেন : ক্বিয়ামতের দিন মু’মিনের পাল্লায় সর্বাপেক্ষা ভারী যে জিনিসটি রাখা হবে, তা হলো উত্তম চরিত্র। আর আল্লাহ তা‘আলা অশ্লীলভাষী দুশ্চরিত্রকে ঘৃণা করেন।[১১]
মানুষের সাথে বদ আচরণকারী ব্যক্তি, অশ্লীল ও কটুবাক্য ব্যবহারকারী ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার কাছে কতটা ঘৃণিত নিম্নোক্ত হাদীস থেকে তা স্পষ্ট হয়ে উঠে-
্রمَا شَيْءٌ أَثْقَلُ فِيْ مِيْزَانِ المُؤْمِنِ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنْ خُلُقٌ حسنٌ وَإِنَّ اللهَ يُبْغِضُ الْفَاحِشَ الْبَذِيءَগ্ধ. ্রوَإِنَّ صَاحِبَ حُسْنِ الخُلُقِ لَيَبْلُغُ بِهِ دَرَجَةَ صَاحِبِ الصَّوْمِ وَالصَّلَاةِগ্ধ.
“ক্বিয়ামতের দিন মু’মিনের ‘আমলনামায় সুন্দর আচরণের চেয়ে অধিক ভারী ‘আমল আর কিছু হবে না। যে ব্যক্তি অশ্লীল ও কটু কথা বলে বা অশোভন আচরণ করে তাকে আল্লাহ তা‘আলা ঘৃণা করেন। আর যার ব্যবহার সুন্দর সে তার ব্যবহারের কারণে নফল সিয়াম ও তাহাজ্জুদের সওয়াব লাভ করবে।”[১২]
দুশ্চরিত্র, দুর্ব্যবহার, কটুবাক্য বর্ষণ এবং জবানের অপব্যবহারের কারণে কোনো ব্যক্তি জাহান্নামী হতে বাধ্য। তার অন্যান্য ‘আমলও তাকে সুরক্ষা দিতে পারবে না। মহানাবী (সা.) ইরশাদ করেছেন :
أَكْثَرِ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ الجَنَّةَ، فَقَالَ : ্রتَقْوَى اللهِ وَحُسْنُ الخُلُقِগ্ধ، وَسُئِلَ عَنْ أَكْثَرِ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ النَّارَ، فَقَالَ : ্রالفَمُ وَالفَرْجُগ্ধ.
“মানুষকে সবচেয়ে বেশি যা জান্নাতে প্রবেশ করাবে তা হলো আল্লাহভীতি এবং সুন্দর চরিত্র। আর মানুষকে সবচেয়ে বেশি যা জাহান্নামে প্রবেশ করাবে তা হলো মুখ ও গুপ্তাঙ্গ।”[১৩]
কোমলতা, সদাচারণ, সচ্চরিত্রতা মু’মিন ব্যক্তিকে দুনিয়া এবং আখিরাতে মহা সাফল্য এনে দেয়। সলাত, সিয়াম, হাজ্জ ও সাদাক্বাহ্ ইত্যাদি ইসলামের মৌলিক ‘ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত হলেও মানবিক এবং ব্যবহারিক চারিত্রিক গুণাবলী মু’মিনকে অসম্ভবভাবে সুশোভিত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত করে। অন্যথায় গোটা ইসলামটাই তার মধ্যে কদর্য ও কুৎসিত রূপ পায়।
হাদীসের শিক্ষা
(১) কোমলতা মহান আল্লাহর একটা বড়ো গুণ, এতে কোমলতার মহিমা ফুটে উঠছে।
(২) সবকিছু অর্জনে নম্রতা ও কোমলতাই কাম্য উপকরণ।
(৩) কঠোরতা দ্বারা কোনো ব্যক্তির ভালো আচরণ অর্জন সম্ভব নয়।
(৪) সদাচরণ চারদিকের পরিবেশকে প্রশান্ত ও স্বার্থক করে তুলে।
(৫) যা কিছু সুকুমল তা-ই শোভাময় হয়, আর যা কিছু রূঢ় ও কর্কশ হয় তা কদর্য ও কুৎসিত হয়।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে আচার-আচরণে পিতা-মাতা, উস্তাদ-ছাত্র, আত্মীয়-পরিজন এবং চারপাশের সকলের সাথে সদাচারী ও সদ্ব্যবহারী হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন -আমীন।
টীকা :
[১] সহীহ মুসলিম, মিশকা-তুল মাসা-বীহ- হাঃ ৫০৬৮।
[২] সিয়াবু আ’লামিন নুবালা- ৭/৯, মাঃ শাঃ, ২/১৮৫, ৩/৪৫৭।
[৩] সূরা আল ক্বাসাস ২৮ : ৭৭।
[৪] সূরা আল আ’রাফ ৭ : ৫৬।
[৫] মুসনাদ আহমাদ- ৬/১৫৯, মাঃ শাঃ, হাঃ ২৫২৫৯।
[৬] সূরা আ-লি ‘ইমরান ৩ : ১৫৯।
[৭] সূরা আ-লি ‘ইমরান ৩ : ১৩৪।
[৮] বুখারী- হাঃ ৭৩৭৬ ও মুসলিম, মিশকাত- হাঃ ৪৯৪৭।
[৯] সূরা আল হিজ্র ১৫ : ৮৮।
[১০] আবূ দাঊদ- মাঃ শাঃ, ৪৮০১, সহীহ, মিশকাত- হাঃ ৫০৮০।
[১১] সুনান আত্ তিরমিযী, মিশকা-তুল মাসা-বীহ- হাঃ ৫০৮১।
[১২] সুনান আত্ তিরমিযী- ৪/৩৬২-৩৬৩, আলবানী সহীহ, হাঃ ২০০২, ২০০৩, সহীহ, সহীহুত্ তারগীব- ৩/৫।
[১৩] সুনান আত্ তিরমিযী- ৪/৩৬৩, সহীহ, মাঃ শাঃ, হাঃ ২০০৪।
[২] সিয়াবু আ’লামিন নুবালা- ৭/৯, মাঃ শাঃ, ২/১৮৫, ৩/৪৫৭।
[৩] সূরা আল ক্বাসাস ২৮ : ৭৭।
[৪] সূরা আল আ’রাফ ৭ : ৫৬।
[৫] মুসনাদ আহমাদ- ৬/১৫৯, মাঃ শাঃ, হাঃ ২৫২৫৯।
[৬] সূরা আ-লি ‘ইমরান ৩ : ১৫৯।
[৭] সূরা আ-লি ‘ইমরান ৩ : ১৩৪।
[৮] বুখারী- হাঃ ৭৩৭৬ ও মুসলিম, মিশকাত- হাঃ ৪৯৪৭।
[৯] সূরা আল হিজ্র ১৫ : ৮৮।
[১০] আবূ দাঊদ- মাঃ শাঃ, ৪৮০১, সহীহ, মিশকাত- হাঃ ৫০৮০।
[১১] সুনান আত্ তিরমিযী, মিশকা-তুল মাসা-বীহ- হাঃ ৫০৮১।
[১২] সুনান আত্ তিরমিযী- ৪/৩৬২-৩৬৩, আলবানী সহীহ, হাঃ ২০০২, ২০০৩, সহীহ, সহীহুত্ তারগীব- ৩/৫।
[১৩] সুনান আত্ তিরমিযী- ৪/৩৬৩, সহীহ, মাঃ শাঃ, হাঃ ২০০৪।
ঢাকায় সূর্যোদয় : 6:17:45
সূর্যাস্ত : 5:11:51
আপনার মন্তব্য1