সাময়িক প্রসঙ্গ
বিশেষ প্রতিবেদন
এম. জি. রহমান

মাওলানা যিল্লুল বাসেত (রহ.): তাক্বওয়ার মূর্তপ্রতীক 

১৯৯৯ সাল। বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস-এর কেন্দ্রীয় কনফারেন্স-এ সেক্রেটারী জেনারেল নির্বাচিত হন বিদগ্ধ আলেমে দীন, সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব, মিষ্টভাষী ও তাক্বওয়ার মূর্তপ্রতীক শাইখ মুহাম্মদ যিল্লুল বাসেত। অতঃপর ২০১০ সালের কনফারেসেন্স সহ-সভাপতি এবং ২০১৬ সাল থেকে মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত জমঈয়তের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টার পদ অলংকৃত করে গত ৩০ মার্চ-২০২০ আল্লাহ তা‘আলার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইহধাম ত্যাগ করেন- ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

এছাড়াও তিনি গাজীপুর জেলা ও ঢাকা মহানগর জমঈয়তে আহলে হাদীস-এর সভাপতি, কেন্দ্রীয় জমঈয়তের সহযোগী সেক্রেটারী জেনারেলসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। শাইখ যিল্লুল বাসেত তৎকালীন জমঈয়ত সভাপতি প্রফেসর আল্লামা ড. মুহাম্মদ আব্দুল বারী (রহ)-এর একান্ত ঘনিষ্টজন ছিলেন। জমঈয়তের সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি তাঁর সাথে বিশেষ পরামর্শ করতেন। ঈমান, আমল, তাক্বওয়া, সততা, সরলতা, বিশ্বস্ততা এমন বহুমুখী সুপ্রবৃত্তি তাঁকে অনন্য এক উচ্চতায় সমাসীন করেছিল।

শাইখ যিল্লুল বাসেত এমন এক সময়ে মৃত্যুবরণ করেন, যখন মরণব্যাধি করোনা ভাইরাস থেকে অত্মরক্ষার্থে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের মানুষ নিজেদেরকে ঘরবন্দি করে রেখেছেন। এমনকি শর‘ঈ বিধান মুতাবেক জুমু‘আর জামা‘আতে অংশগ্রহণ থেকেও বিরত থাকছেন। কিন্তু যখন তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লো, তখন স্থানীয় জনতাসহ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষ আর নিজেদেরকে ঘরবন্দি করে রাখতে পারেননি। মাওলানা সাহেবের প্রতি ভালোবাসার এক অন্তর্নিহিত টানে স্বীয় জীবন তুচ্ছজ্ঞান করে তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে ও জানাযায় অংশগ্রহণ করতে ছুটে আসেন বিপুল সংখ্যক মুসল্লী। শোকার্ত মানুষগুলো মুহূর্তের জন্য বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্বের কথা ভুলে গিয়েছিল। 

কেন্দ্রীয় জমঈয়তের সেক্রেটারী জেনারেল শাইখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খাঁন মাদানী ঢাকার নাজির বাজারের বাসা থেকে রওনা হয়ে জানাযার পূর্বেই টঙ্গী পৌঁছান এবং বাদ মাগরিব টঙ্গীর সিরাজউদ্দিন সরকার বিদ্যা নিকেতন মাঠে মাইয়্যেতের প্রথম জানাযায় ইমামতি করেন। এ সময় মাঠে তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। জানাযা শেষে সেক্রেটারী জেনারেল মাইয়্যেতের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর নেন এবং কেন্দ্রীয় জমঈয়তের পক্ষ থেকে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। অতঃপর তিনি বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস-এর সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আযহার উদ-দীন ও সহ-সভাপতি আলহাজ্জ আওলাদ হোসেন-এর পক্ষ থেকে প্রেরিত সালাম ও দু‘আ ও সমবেদনা পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেন।

রাত ১০ টায় নিজ গ্রাম উজামপুর দাখিল মাদরাাসা মাঠে মাইয়্যেতের দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন কেন্দ্রীয় জমঈয়তে খাওয়াতীন ও আতফাল বিষয়ক সেক্রেটারী ও মাদরাসা মুহাম্মদীয়া আরাবীয়ার মুহাদ্দিস শাইখ ড. রফিকুল ইসলাম মাদানী। জানাযা শেষে শাইখ যিল্লুল বাসেত (রহ)-কে পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত করা হয়।

এক বিশেষ বার্তায় বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস-এর সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আযহার উদ-দীন ও সেক্রেটারী জেনারেল শাইখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী বলেন, প্রত্যেক মানুষকেই নির্ধারিত সময়ে চিরবিদায় নিতে হবে, কিন্তু কারো কারো মৃত্যুতে ব্যাপক শূন্যতা সৃষ্টি হয়। শাইখ যিল্লুল বাসেত (রহ)-এর মৃত্যুও আমাদেরকে এক মহাশূন্যতায় নিক্ষেপ করেছে। কারণ তিনি ছিলেন আমাদের অভিভাবকতুল্য। সর্বোপরি, বর্তমান দুনিয়ায় এমন নিলোর্ভ-নির্মোহ আলেমে দীন-এর বড়ই অভাব।

অতঃপর নেতৃদ্বয় সকল মুসলিমের কাছে তাঁর মাগফিরাত ও জান্নাতুল ফিরদাউস-এর জন্য দু‘আ কামনা করে পরিবারসহ শোকার্ত সকলের প্রতি সমবেদনা জানান।

শাইখ যিল্লুল বাসেত (রহ)-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী:

জন্ম ও বংশ পরিচয় : দীনসেবক মাওলানা যিল্লুল বাসেত ভূঁঞা ০৯ মার্চ ১৯৩৬ ঈসায়ী সনে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানাধীন নোয়াগাঁও গ্রামের মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৌলভী আশরাফ উদ্দিন ভূঁঞা এবং মাতা আমাতুল মযিদ তাহেরা। তাঁর পিতৃলয়- গ্রাম- উযামপুর, উত্তর খান, উত্তরা, ঢাকা। 

পিতা মৌলভী আশরাফ উদ্দিন ভূঁঞা একজন দীনদার-মুত্তাক্বী আলেম ছিলেন, ধর্মীয় বিষয়ে সমাধান পেতে পার্শবর্তী অঞ্চলের লোকজন তাঁর কছে ছুটে আসতো। তিনি প্রখ্যাত আলেম সৈয়দ মীর ওবায়দুর রহমানের কন্যা সৈয়দা আমতুল মযিদ তাহেরার সাথে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। মিসেস তাহেরার গর্ভে জন্মলাভ করেন যিল্লুল বাসেত। তাঁর সৌন্দর্য ছিল নজরকাড়া। এজন্য নানা ওবায়দুর রহমান প্রাণপ্রিয় নাতিকে তার চাদরের ভেতর লুকিয়ে রাখতেন, যাতে কারো বদ-নজর না লাগে।

শিক্ষা জীবন : নানা এবং মায়ের কাছেই আরবী, ফারসী ও ঊর্দূর সূচনাশিক্ষা লাভ করেন শিশু যিল্লুল বাসেত। অতঃপর প্রিয় নাতিকে যোগ্য আলেম হিসাবে গড়ে তোলার মনোবাসনা পূরণার্থে বাড়ির অদূরে রসূলপুর (পাগলা) মাদরাসায় ভর্তি করে দেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি আরামনগর মাদরাসা থেকে তিনি দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় বোর্ডস্ট্যান্ডসহ বৃত্তি লাভ করে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ১৯৬১ সনে ঢাকা আলিয়া মাদরাসা থেকে বিশেষ কৃতিত্বের সাথে ফাযিল ও কামিল সম্পন্ন করেন।

কামিল সম্পন্ন করে জ্ঞানসাধক যিল্লুল বাসেত দীনী ইলম্-এর উপর বিশেষ ব্যুৎপত্তি লাভের উদ্দেশে তাঁর প্রিয় উস্তাযগণের পরামর্শে এ উপমহাদেশের শতাব্দীশ্রেষ্ঠ আলেম আল্লামা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল কুরায়শী (রহ) প্রতিষ্ঠিত পুরাতন ঢাকার নাজিরা বাজারে অবস্থিত মাদরাসাতুল হাদীসে প্রথম ব্যাচের ছাত্র হিসাবে ভর্তি হয়ে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করেন। এখানে তিনি উপমহাদেশের জগতবিখ্যাত আলেম আল্লামা আব্দুল্লাহ নদভী, শাইখুল হাদীস আল্লামা কবীরুদ্দীন রাহমানী, শাইখ রমযান আলী, শাইখ হাবিবুল্লাহ খান রাহমানী ও মাওলানা মাহবুবুর রহমান রাহমানী প্রমুখ ওস্তাযগণের স্নেহাধন্য ছাত্র হিসাবে শিক্ষা লাভ করেন।

পারিবারিক জীবন :

শাইখ যিল্লুল বাসেত ১৯৬৭ সনে খ্যাতিমান আলেমে দীন মাওলানা মুহাম্মদ রঈসুদ্দীন-এর জ্যেষ্ঠ কন্যার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর শ্বশুর মাওলানা রঈসুদ্দীন (রহ) ইসলামী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি পাকিস্তান আমলে ইসলামী মোর্চা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি জাতীয় পরিষদ নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেন এবং পাকিস্তান আমলে তৎকালীন সরকারের তল্পীবাহক মোমিন কোম্পানির বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন ও সংশ্লিষ্ট মামলায় বিজয়ী হন। তিনিই প্রথম নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী মহাসড়কে গণপরিবহনের সূচনা করেন। এছাড়াও তিনি আল্লামা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহিল কাফী আল কুরায়শী (রহ)-এর একান্ত সহচর ও তৎকালীন জমঈয়তের সহযোগী সেক্রেটারী জেনালের ছিলেন।

মাওলানা যিল্লুল বাসেত মৃত্যুকালে স্ত্রী, ০১ কন্যা ও ২ পুত্র রেখে যান। তাঁর বড় ছেলে মাশহুদুল বাসেত একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ছোট ছেলে মাহমুদুল বাসেত উম্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর পদে কর্মরত আছেন, আর কন্যা মুবাশ্বেরা তাহেরা নিউজিল্যান্ড প্রবাসী, তিনি মহিলাদের মাঝে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ প্রচারে দাঈর ভূমিকা পালন করছেন।

ধমীয় ও সামাজিক কার্যক্রম : শাইখ যিল্লুল বাসেত ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫ সন হতে ১৯৮৭ সন পর্যন্ত সুদীর্ঘ ২২ বছর ঢাকার বেরাইদের ঐতিহ্যবাহী ভূঁঞাপাড়া মাসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮৯ সন পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ বেরাইদে ঈদের জামাআত পরিচালনা করেন। অতঃপর টঙ্গীতে নিজ হাতে গড়া টঙ্গী বাজার আহলে হাদীস মাসজিদে ১২ বছর খতীবের দায়িত্ব পালন করেন। শাইখ যিল্লুল বাসেত ১৯৯৯ সনে কেন্দ্রীয় জমঈয়তের সেক্রেটারী জেনারেল নির্বাচিত হওয়ার পর এ বছরেই সৌদি বাদশাহর রাজকীয় বিশেষ মেহমান হিসেবে পবিত্র হজ্জ সম্পন্ন করেন। এতদ্ব্যতীত তিনি ১৩ বছর বংশাল বড় মাসজিদে খতীবের দায়িত্ব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে আহলে হাদীসদের প্রধান ঈদের জামাআতও পরিচালনা করেন।

তাঁর উল্লেখযোগ্য সামাজিক কার্যক্রমের মধ্যে উজামপুর দাখিল মাদরাসা, টঙ্গী মুহাম্মাদিয়া এতিমখানা মাদরাসা, মৈনারটেক কেন্দ্রীয় জামে মাসজিদ ও পূবাইল বাজার আহলে হাদীস জামে মাসজিদসহ ঢাকা, গাজীপুর ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বহু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ধীরস্থির, শান্তস্বভাব, বিচক্ষণ ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। কুরআন ও সহীহ হাদীসভিত্তিক ঐক্যবদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠায় তিনি নিরলস কাজ করেছেন। যে কোন দুর্যোগ বা সমস্যা নিয়ে কেউ তাঁর শরণাপন্ন হলে তাকে নিরাশ হতে হতো না।

কর্ম জীবন : ধামরাই ইসলামিয়া কামিল মাদরাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা। পরবর্তীতে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার বেলদী মাদরাাসায় উপাধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। অতঃপর ১৯৬৭ সনে বৃহত্তর উত্তরা, সাবেক টঙ্গী পৌরসভা ও গাছা ইউনিয়ন-এর ম্যারিজ রেজিস্টার ও কাজী হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় কাজী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। পারিবারিক আইন প্রণয়ন ্ও সংস্কারে কাজী প্রতিনিধি হিসাবে বিভিন্ন সময়ে তিনি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পারন করেন। ১৯৬৭-২০০৯ সুদীর্ঘ সময়ে অত্যন্ত সুনাম ও মর্যাদার সাথে তিনি নিজ দায়িত্ব পালন করেছেন। দলমত, শ্রেণি-পেশা ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তিনি সকল মানুষের প্রিয়পাত্র ছিলেন।

৩০ মার্চ ২০২০ সোমবার, আরবী শা‘বান মাসে যুহরের আযানের সময় দুনিয়ার সকল চাওয়া-পাওয়ার উর্ধ্বে উঠে ইহজগত ত্যাগ করেন শাইখ যিল্লুল বাসেত- (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মহান আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের আলা সাক্বাম দান করুন! আমীন!!

বি.দ্র: মাইয়্যেতের জ্যেষ্ঠপুত্র জনাব মাশহুদুল বাসেত প্রেরিত তথ্যের আলোকে প্রতিবেদন তৈরি  প্রতিবেদন তৈরি করেছেন সহকারী সম্পাদক মুহাম্মদ গোলাম রহমান। ]



একজন মহিয়সী নারীর ইন্তিকাল

আরাফাত ডেস্ক : বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস-এর তথ্য প্রযুক্তি ও পরিসংখ্যান বিষয়ক সেক্রেটারী আলহাজ্জ আনোয়ারুল ইসলাম জাহাঙ্গীর-এর মাতা গত ১৭ মার্চ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টায় ইন্তিকাল করেছেনÑ ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর  বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ ও সরলমনা নারী ছিলেন। প্রতিবেশি, আত্মীয়-স্বজন ও গরীব-দুঃখীদের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম উদারতা ও মহানুভবতা ছিল দৃষ্টান্তস্বরূপ।

শিক্ষার প্রতিও তাঁর অনুরাগ ছিল, এ জন্য স্বীয় মাতৃ-মমতাকে বুকে চেপে তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র আনোয়ারুল ইসলাম জাহাঙ্গীরকে উচ্চশিক্ষা অর্জনের উদ্দেশে সুদূর মার্কিন মুলুকে প্রেরণ করেন এবং তিনি সেখানকার খ্যাতনামা ডরপযরঃধ ঝঃধঃব টহরাবৎংরঃু (উইচিটা স্টেট  ইউনিভার্সিটি) থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বর্তমানে অত্যন্ত সুনামের নিজ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এছাড়াও জনাব জাহাঙ্গীর কেন্দ্রীয় জমঈয়তের তথ্য-প্রযুক্তি ও পরিসংখ্যান বিষয়ক সেক্রেটারীর দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালনের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন। তাঁর ছোট ছেলে ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামও সমানধন্য জার্মান কোম্পানী সিমেন্স বাংলাদেশে কর্মরত। এছাড়াও তাঁর ৩ কন্যা মাতৃআদর্শ ধারণ করে নিজ নিজ সংসারের প্রতি কর্তব্যপরায়ণ।

মাইয়্যিতের গোসল ও কাফন সম্পন্ন হওয়ার পর রাত ১১ টায় বংশাল বড় জামে মাসজিদে সালাতুল জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি করেন কেন্দ্রীয় জমঈয়তের সেক্রেটারী জেনারেল শাইখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস-এর সহ-সভাপতি ও বংশাল বড় জামে মাসজিদের মুতাওয়াল্লী আলহাজ্জ আওলাদ হোসেন, কেন্দ্রীয় মহানগর জমঈয়তের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীবৃন্দ, পুরাতন ঢাকার সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক স্থানীয় মুসল্লী।

জানাযা শেষে মাইয়্যিতকে বংশাল পেয়ালাওয়ালা জামে মাসজিদের পেছনে অবস্থিত পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানাযা শেষে সেক্রেটারী জেনারেল এক বার্তায় বলেন, মাননীয় জমঈয়ত সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আযহার উদ-দীন মাইয়্যিতের পরিবারের প্রতি সালাম ও সমবেদনা জানিয়ে তাঁর মাগফিরাতের জন্য দু‘আ করেছেন এবং সকল মুসলিমকে দু‘আ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। আমরাও জনাব আনোয়ারুল ইসলাম জাহাঙ্গীর-এর শোকার্ত পরিবারের সাথে সমব্যথিত। আমাদের প্রাণোৎসারিত প্রার্থনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে জান্নাতের সুউচ্চ স্থান দান করুন। আমীন।

 



আরাফাত ডেস্ক


আপনার মন্তব্য

ঢাকায় সূর্যোদয় : 6:17:45 সূর্যাস্ত : 5:11:51

সাপ্তাহিক আরাফাতকে অনুসরণ করুন

@সাপ্তাহিক আরাফাত