সাময়িক প্রসঙ্গ
যিনা-ব্যভিচার থেকে বাঁচার উপায়
শরিফুল ইসলাম বিন মোকতাল্

[পর্ব- ০১]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
﴿وَلَا تَقْرَبُوْا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيْلًا﴾
সরল অনুবাদ : “আর তোমরা যিনার ধারে-কাছেও যেও না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ।”[১]
আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা যিনা-ব্যভিচার হারাম করার অন্যতম দু’টি কারণ উল্লেখ করেছেন। প্রথম কারণ, এটি একটি অশ্লীল কাজ। দ্বিতীয় কারণ, সামাজিক অনাসৃষ্টি। যিনা-ব্যভিচারের অশুভ পরিণাম অনেক সময় সমগ্র সম্প্রদায়কে বরবাদ করে দেয়। এ কারণেই ইসলাম এ অপরাধটিকে গুরুতর বলে সাব্যস্ত করেছে এবং তার শাস্তির বিধান কঠোর করেছে।


আল্লাহ তা‘আলা যিনা-ব্যভিচার হারাম করার সাথে সাথে যিনার দিকে উদ্বুদ্ধকারী মাধ্যম ও পন্থাকেও হারাম করেছেন এবং যিনা-ব্যভিচারের দিকে পৌঁছার সকল চোরাপথও বন্ধ করে দিয়েছেন। যাতে সে হারামটি প্রকৃতপক্ষেই কার্যকর হতে পারে।
১। ইসলাম নারী ও পুরুষের অবস্থান এবং কর্মক্ষেত্র পৃথক করে দিয়েছেন। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া নারী-পুরুষের মেলামেশা, অযথা কথাবার্তা, আলাপচারিতা, হাসি-ঠাট্টা, মশকরা ও রশিকতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে।


﴿يَاأَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُوْنُوْا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ﴾
অর্থ : “হে মু’মিনগণ! কোন পুরুষ যেনো অপর কোন পুরুষকে বিদ্রুপ না করে; কেননা তারা তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর কোন নারীকেও যেনো বিদ্রুপ না করে; কেননা তারা তাদের অপেক্ষা উত্তম হতে পারে।”[২]


আয়াতে পুরুষ ও নারীদের কথা আলাদা করে উল্লেখ করার অর্থ এ নয় যে, নারী-পুরুষ পরস্পর তামাশা করা জায়িয; বরং যে কারণে নারী-পুরুষদের বিষয় আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে তা হচ্ছে- ইসলাম এমন সমাজ আদৌ সমর্থন করে না, যেখানে নারী-পুরুষ অবাধে মেলামেশা করতে পারে। মাহরাম নয় এমন নারী-পুরুষ কোন মাজলিসে একত্র হয়ে পরস্পর হাসি-তামাসা করবে ইসলামে এমন অবকাশ অদৌ রাখা হয়নি। নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন :
عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ إِلَّا كَانَ ثَالِثَهُمَا الشَّيْطَانُ.
“যখনই কোন পুরুষ কোন নারীর সাথে নির্জনতা অবলম্বন করে, তখনই শয়ত্বান তাদের তৃতীয় সাথী হয়।”[৩] নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরও বলেন :
عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ (رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا) أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ ثَلَاثَةٌ قَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِمْ الْجَنَّةَ مُدْمِنُ الْخَمْرِ وَالْعَاقُّ وَالدَّيُّوْثُ الَّذِيْ يُقِرُّ فِيْ أَهْلِهِ الْخَبَثَ.
‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার হতে বর্ণিত। নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন : তিন শ্রেণীর লোকের জন্য আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন। অব্যাহত মদ পানকারী, মাতা-পিতার অবাধ্যজন এবং এমন বেহায়া, যে তার পরিবারের অশ্লীলতাকে মেনে নেয়।[৪]


২। ইসলাম প্রয়োজনে নারীদের বাড়ীর বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে, তবে সাজসজ্জা করে আকর্ষণীয়রূপে বের হতে নিষেধ করেছে।
﴿وَقَرْنَ فِيْ بُيُوْتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُوْلَى﴾
“তোমরা তোমাদের গৃহেই অবস্থান করো এবং যাহেলী যুগের নারীদের মতো খোলামেলাভাবে বের হয়ো না।”[৫]
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা নারীদেরকে গোপন সৌন্দর্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদচারণা করতেও নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
﴿وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِيْنَ مِنْ زِيْنَتِهِنَّ﴾
“কারণ যখনই নারী ঘরের বাইরে যায় শয়ত্বান তাকে পর-পুরুষের দৃষ্টিতে আরও সুশোভন করে তোলে।”
মহানাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন :
عَنْ عَبْدِ اللهِ بن مَسْعُوْدٍ (رَضِيَ اللهُ عَنْهُ)، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَ : الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ، وَإِنَّهَا أَقْرَبُ مَا يَكُوْنُ إِلَى اللهِ وَهِيَ فِيْ قَعْرِ بَيْتِهَا.
‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ হতে বর্ণিত। নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন : মেয়ে মানুষ গোপনীয়। যখন সে নিজ বাড়ী থেকে বের হয়, তখন শয়ত্বান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে শোভন করে তোলে। সে নিজ বাড়ীর আন্দর মহলে অবস্থান করে মহান আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী থাকে।[৬]


৩। নারী কোন প্রয়োজনে বাড়ীর বাইরে বের হলে অবশ্যই ভালভাবে শরীর ঢেকে বের হবে।
﴿يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِيْنَ يُدْنِيْنَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيْبِهِنَّ ذٰلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَحِيْمًا﴾
“হে নাবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে এবং মু’মিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেনো তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদের চিনা সহজতর হবে; ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[৭]
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
﴿وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰى جُيُوْبِهِنَّ وَلَا يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ﴾
“আর তারা যেনো তাদের গলা ও বুক মাথার কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখে।”[৮]


৪। সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহার করে নারীদেরকে বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
عَن  أبِيْ مُوْسٰى الْأَشْعَرِيِّ (رَضِيَ اللهُ عَنْهُ) قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَيُّمَا امْرَأَةٍ اسْتَعْطَرَتْ فَمَرَّتْ بِقَوْمٍ لِيَجِدُوْا رِيْحَهَا فَهِيَ زَانِيَةٌ.
আবূ মুসা আল আশয়ারী হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেন, যে নারী সুগন্ধি ব্যবহার করে কোন সম্প্রদায়ের নিকট দিয়ে গমন করে, যাতে তারা তার ঘ্রাণ পায়, তাহলে সে ব্যভিচারী।[৯]
عَنْ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ كُلُّ عَيْنٍ زَانِيَةٌ وَالْمَرْأَةُ إِذَا اسْتَعْطَرَتْ فَمَرَّتْ بِالْمَجْلِسِ فَهِيَ كَذَا وَكَذَا يَعْنِي زَانِيَةً. حسن
আবূ মূসা আল আশ‘আরী হতে বর্ণিত। নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, প্রতিটি চক্ষু যিনাকারী, নারী যখন সুগন্ধি ব্যবহার করে কোন বৈঠকের নিকট দিয়ে গমন করে, তাহলে সে এমন এমন অর্থাৎ- ব্যভিচারী।[১০]
عَنْ يَحْيَى بْنِ جَعْدَةَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ (رَضِيَ اللهُ عَنْهُ) خَرَجَتْ اِمْرَأَةٌ عَلٰى عَهْدِهِ مُتَطَيِّبَةً فَوَجَدَ رِيْحَهَا فَعَلَاهَا بِالدَّرَّةِ ثُمَّ قَالَ تَخْرُجْنَ مُتَطَيِّبَاتٍ فَيَجِدُ الرِّجَالُ رِيْحَكُنَّ. وَإِنَّمَا قُلُوْبُ الرِّجَالِ عِنْدَ أُنُوْفِهِمْ اُخْرُجْنَ تَفِلَاتٍ.
ইয়াহইয়া ইবনু জা‘দাহ হতে বর্ণিত। ‘উমার (রাযিঃ)-এর সময় এক রমনী সুগন্ধি ব্যবহার করে বের হলো। তিনি তার ঘ্রাণ পেয়ে তার উপর চাবুক উত্তোলন করলেন। অতঃপর বললেন, তোমরা সুগন্ধি ব্যবহার করে বের হও আর তার ঘ্রাণ পুরুষরা পায়। নিশ্চয় পুরুষদের অন্তর তার নাকের কাছে। তোমরা সুগন্ধি ছাড়া বের হবে।[১১]
এমনকি কোন নারী যদি সালাত আদায় করার জন্যও সুগন্ধি ব্যবহার করে মাসজিদও আসে, তাহলে তার সালাত কবুল করা হয় না যতক্ষণ সে রমনী নাপাকী হতে প্রবিত্র হওয়ার মতো গোসল না করে।


عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ (رَضِيَ اللهُ عَنْهُ) قَالَ لَقِيَتْهُ امْرَأَةٌ وَجَدَ مِنْهَا رِيْحَ الطِّيْبِ يُنْفَحُ وَلِذَيْلِهَا إِعْصَارٌ فَقَالَ يَا أَمَةَ الْجَبَّارِ جِئْتِ مِنَ الْمَسْجِدِ قَالَتْ نَعَمْ. قَالَ وَلَهُ تَطَيَّبْتِ قَالَتْ نَعَمْ. قَالَ إِنِّىْ سَمِعْتُ حِبِّى أَبَا الْقَاسِمِ ﷺ يَقُوْلُ : لَا تُقْبَلُ صَلَاةٌ لاِمْرَأَةٍ تَطَيَّبَتْ لِهَذَا الْمَسْجِدِ حَتّٰى تَرْجِعَ فَتَغْتَسِلَ غُسْلَهَا مِنَ الْجَنَابَةِ.
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্ হু) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, তার সাথে এমন এক মহিলা সাক্ষাত করে যার থেকে তিনি সুঘন্ধির ঘ্রাণ পাচ্ছিলেন এবং তার পাতলা কাপড়ও বাতাসে উড়ছিল। হে আল্লাহর বান্দী! মাসজিদ হতে এসেছ? সে মহিলা বলে হ্যাঁ, আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্ হু) তাকে বলে, তার জন্যই সুঘন্ধি লাগিয়েছ? সে মহিলা বলে, হ্যাঁ। তখন আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্ হু) বলেন, আমি আমার প্রিয় আবুল কাসেম (ﷺ)-এর কাছ থেকে শুনেছি, তিনি বলেন, ঐ মহিলার সালাত কবুল করা হবে না যে এ মাসজিদে গমনের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করে যতক্ষণ না সে ফিরে গিয়ে নাপাকি থেকে পবিত্রতার ন্যায় গোসল করে।[১২]
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ (رَضِيَ اللهُ عَنْهُ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِذَا خَرَجَت الْمَرْأَةُ إِلَى الْمَسْجِدِ فَلْتَغْتَسِلْ مِنْ الطِّيْبِ كَمَا تَغْتَسِلُ مِنْ الْجَنَابَةِ.
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্ হু) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন কোন মহিলা মাসজিদের দিকে বের হয়, তখন সে যেনো সুগন্ধি দূর করতে গোসল করে যেমন নাপাকি হতে পবিত্র হতে গোসল করে।[১৩]
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ (رَضِيَ اللهُ عَنْهُ) أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ : لَا تَمْنَعُوْا إِمَاءَ اللهِ مَسَاجِدَ اللهِ وَلَكِنْ لِيَخْرُجْنَ وَهُنَّ تَفِلَاتٌ.
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্ হু) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমরা মহান আল্লাহর বান্দীদের মহান আল্লাহর ঘর মাসজিদে প্রবেশে বাধা দিও না, তবে তারা যেনো সুগন্ধিমুক্ত হয়ে বের হয়।[১৪]


৫। চলতে ফিরতে নারী-পুরুষের পরস্পর সাক্ষাত ঘটলে স্ব-স্ব দৃষ্টি অবনত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
﴿قُلْ لِلْمُؤْمِنِيْنَ يَغُضُّوْا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوْا فُرُوْجَهُمْ ذٰلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللهَ خَبِيْرٌ بِمَا يَصْنَعُوْنَ ۝ وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوْجَهُنَّ﴾
“হে নাবী! আপনি মু’মিন পুরুষদেরকে বলে দিন তারা যেনো তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে হিফাজত করে। এটাই তাদের পরিশুদ্ধির জন্য সর্বোত্তম। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত। আপনি মু’মিন নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেনো তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে হিফাজত করে।”[১৫]


৬। নারীদের নিকট কোন কিছু চাওয়ার প্রয়োজন হলে পর্দার আরাল হতে চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
﴿وَإِذَا سَأَلْتُمُوْهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوْهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوْبِكُمْ وَقُلُوْبِهِنَّ﴾
“যখন তোমরা তাদের (নাবী পতœীগণের) নিকট কোন কিছু চাও, তা পর্দার আড়াল থেকে চাও, এটাই তোমাদের এবং তাদের অন্তরের জন্য পবিত্রতম।”[১৬]


৭। একান্ত প্রয়োজনে কোন নারীকে পর-পুরুষের সাথে কথা বলতে হলে, শালীনতা বজায় রেখে সতর্কতার সাথে কথা বলতে হবে। কারণ কথা সুন্দর বলতে পারলে রমনীর সুন্দরতা যেমনি বৃদ্ধি পায় তেমনি বেগানা পুরুষের সাথে কথা সুন্দর বললে সেই রমনীর সৌন্দর্য চুরি হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তাই মুসলিম রমনীকে মহান আল্লাহর নির্দেশ মনে রেখে কথা বলতে হবে।
﴿يَانِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِيْ فِيْ قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوْفًا﴾
“হে নাবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য কোনো নারীর মতো নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তবে পর-পুরুষের সাথে কোমল কন্ঠে এমনভাবে কথা বলো না, যাতে ব্যধিগ্রস্ত অন্তরের লোকেরা লোভাতুর হয়ে পরে, আর তোমরা কথা বলবে সঙ্গতভাবে।”[১৭] [চলবে]


[১] সূরা বানী ইসরা-ঈল, আয়াত : ৩২।
[২] সূরা আল হুজুরা-ত, আয়াত : ১১।
[৩] আত্ তিরমিযী- হাঃ ১১৭১, আলবানী সহীহ বলেছেন।
[৪] মুসনাদ আহমাদ- হাঃ ৫৩৭২।
[৫] সূরা আল আহ্যা-ব, আয়াত : ৩৩।
[৬] তবারানী- হাঃ ৯৯৬৯, সুনান আত্ তিরমিযী- হাঃ ১১৭৩।
[৭] সূরা আল আহ্যা-ব, আয়াত : ৫৯।
[৮] সূরা আন্ নূর, আয়াত : ৩১।
[৯] আন্ নাসায়ী- হাঃ ৫১২৬, মুসনাদ আহমাদ- হাঃ ১৯৭১১।
[১০] আত্ তিরমিযী- হাঃ ২৭৮৬, আলবানী হাসান বলেছেন।
[১১] মুসান্নাফ ‘আব্দুর রায্যাক- হাঃ ৮১০৭।
[১২] সুনান আবূ দাঊদ- হাঃ ৪১৭৬, সহীহ।
[১৩] সুনান আন্ নাসায়ী- হাঃ ৫১২৭।
[১৪] সুনান আবূ দাঊদ- হাঃ ৫৬৫, সহীহ।
[১৫] সূরা আন্ নূর, আয়াত : ৩০-৩১।
[১৬] সূরা আল আহ্ যাব : ৫৩।
[১৭] সূরা আল আহযাব : ৩২।


আপনার মন্তব্য1

ঢাকায় সূর্যোদয় : 6:17:45 সূর্যাস্ত : 5:11:51

সাপ্তাহিক আরাফাতকে অনুসরণ করুন

@সাপ্তাহিক আরাফাত