সাময়িক প্রসঙ্গ
ঘর সাজাতে চাই চেতনার পরিবর্তন
শাইখ মুহাম্মাদ হারুন হুসাইন



মুসলিম যিনি দ্বীন ও দুনিয়ায় সর্বত্র কামিয়াবী ও সফলতা লাভ করে সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে পারেন তিনি। চাই শুধু চেতনার পরিবর্তন।

গৃহ প্রত্যেক মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নি‘আমত। মানব জীবনে ঘর-বাড়ীর গুরুত্ব ও উপকারিতা বস্তীবাসী, ফুটপাথ, রাস্তার পার্শ্বে, রেলওয়ে স্টেশনের পার্শ্বে বসবাসকারীদের প্রতি খেয়াল করলে অনুধাবন করা যায়। ঘর থেকেই হিদায়াতের আলোকে মানুষের জীবন আলোকিত হয়। কারণ মুসলমান কিভাবে ঘরে প্রবেশ করবে, কিভাবে ঘর থেকে বের হবে, ঘরে কিভাবে থাকবে, জিনিসপত্র  ঘরে কিভাবে রাখবে এবং ঘরে কি করবে প্রভৃতি বিষয়ের বিশদ বিবরণ রয়েছে কুরআন ও হাদীসে। এ জন্য যদি আমরা ঘরগুলো আমাদের ইসলামী শিক্ষা ও বৈশিষ্ট্য দ্বারা সুশোভিত করি তাহলে আমাদের এ ঘর আমাদের জন্য সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তায় পরিপূর্ণ হবে এবং সচ্ছলতা আসবে। সেই সাথে আমাদের সন্তানরা সহজেই ইসলামী শিক্ষার উপরে গড়ে উঠবে।

নি¤েœ ইসলামী বাড়ী-ঘরের কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো, যাতে মুসলমান নিজের বাড়ী-ঘরকে ইসলামী গুণাবলী সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে পারে। এমনকি তাকে দা‘ওয়াতের কেন্দ্র ও উত্তম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসাবে তৈরী করতে পারে।

১. বাড়ীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ‘বিস্মিল্লা-হ’ বলা : রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

إِذَا دَخَلَ الرَّجُلُ بَيْتَهُ فَذَكَرَ اللهَ عِنْدَ دُخُوْلِهِ وَعِنْدَ طَعَامِهِ قَالَ الشَّيْطَانُ لَا مَبِيْتَ لَكُمْ وَلَا عَشَاءَ. وَإِذَا دَخَلَ فَلَمْ يَذْكُرِ اللهَ عِنْدَ دُخُوْلِهِ قَالَ الشَّيْطَانُ أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيْتَ. وَإِذَا لَمْ يَذْكُرِ اللهَ عِنْدَ طَعَامِهِ قَالَ أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيْتَ وَالْعَشَاءَ.

কোন ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশকালে এবং খাবার গ্রহণকালে মহান আল্লাহর নাম স্মরণ করলে শয়ত্বান (তার সংগীদেরকে) বলে, তোমাদের রাত্রি যাপন এবং রাতের আহারের কোন ব্যবস্থা হলো না। কিন্তু কোন ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশকালে মহান আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়ত্বান বলে, তোমরা রাত্রি যাপনের জায়গা পেয়ে গেলে। সে আহারের সময় মহান আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়ত্বান বলে, তোমাদের রাতের আহার ও শয্যা গ্রহণের ব্যবস্থা হয়ে গেলো। 

২. গৃহে প্রবেশকালে সালাম দেওয়া : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَإِذَا دَخَلْتُمْ بُيُوْتًا فَسَلِّمُوْا عَلٰى أَنْفُسِكُمْ﴾

“অতঃপর যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন পরস্পরে সালাম করবে।” 

অন্যের গৃহে প্রবেশকালেও সালাম দিবে : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَاأَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُيُوْتًا غَيْرَ بُيُوْتِكُمْ حَتّٰى تَسْتَأْنِسُوْا وَتُسَلِّمُوْا﴾

“হে মু’মিনগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্যের গৃহে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নিবে এবং সালাম দিবে।” 

রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, পরিত্যক্ত ঘরে প্রবেশ করলে বলবেÑ

السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ.

আমাদের উপরে ও মহান আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাদের উপরে শান্তি বর্ষিত হোক। 

৩. সুন্নাত সালাতসমূহ গৃহে আদায় করা : রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

فَعَلَيْكُمْ بِالصَّلَاةِ فِىْ بُيُوْتِكُمْ فَإِنَّ خَيْرَ صَلَاةِ الْمَرْءِ فِىْ بَيْتِهِ إِلَّا الصَّلَاةَ الْمَكْتُوْبَةَ.

‘তোমাদের জন্য বাড়ীতে সালাত আদায় করা জরুরী। কেননা র্ফয সালাত ব্যতীত লোকেরা ঘরে যে সালাত আদায় করে তাই উত্তম।’ 

اِجْعَلُوْا فِىْ بُيُوْتِكُمْ مِنْ صَلَاتِكُمْ، وَلَا تَتَّخِذُوْهَا قُبُوْرًا.

তোমাদের ঘরেও কিছু সালাত আদায় করবে এবং ঘরকে তোমরা করব বানিয়ে নিও না।

৪. ঘরে ছবি-মূর্তি না ঝুলানো : রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيْهِ كَلْبٌ وَلَا تَصَاوِيْرُ.

‘যে ঘরে কুকুর ও ছবি থাকে সে ঘরে (রহমত ও বরকতের) ফেরেশ্তা প্রবেশ করে না।’ 

৫. বাড়ীতে কুকুর প্রতিপালন না করা : বাড়ীতে কুকুর প্রতিপালন করা মুসলমানের জন্য বৈধ নয়। আর এজন্য মুসলমানের নেক ‘আমলের সওয়াব নষ্ট হয়ে যায়। রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন :

لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيْهِ كَلْبٌ وَلَا تَصَاوِيْرُ.

‘যে ঘরে কুকুর ও ছবি থাকে সে ঘরে (রহমত ও বরকতের) ফেরেশ্তা প্রবেশ করে না।’ 

আর কুকুর প্রতিপালনে বহু নেকী হ্রাস পায়।

রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

مَنْ أَمْسَكَ كَلْبًا فَإِنَّهُ يَنْقُصُ كُلَّ يَوْمٍ مِنْ عَمَلِهِ قِيْرَاطٌ، إِلَّا كَلْبَ حَرْثٍ أَوْ مَاشِيَةٍ.

‘তবে তিনটি কারণে কুকুর পোষা জায়েয। যথা- ১. পশুপাল পাহারা দেওয়া, ২. শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়া ও ৩. শিকার করার জন্য।’ 

৬. অন্য কোন ধর্মের নিদর্শন না রাখা : মুসলমান বরং সেগুলোকে স্বীয় গৃহ থেকে দূরে রাখবে। ‘আয়িশাহ্ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হা) বলেন :

,أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ لَمْ يَكُنْ يَتْرُكُ فِىْ بَيْتِهِ شَيْئًا فِيْهِ تَصَالِيْبُ إِلَّا نَقَضَهُ.

‘নাবী কারীম (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজের ঘরের এমন কিছুই না ভেঙ্গে ছাড়তেন না, যাতে ক্রুসের চিহ্ন বা ছবি থাকত।’ 

৭. ঘরে চিতাবাঘের চামড়া ঝুলিয়ে বা বিছিয়ে না রাখা : রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

لَا تَرْكَبُوْا الْخَزَّ وَلَا النِّمَارَ.

‘তোমরা রেশমের এবং চিতা বাঘের তৈরী গদিতে আরোহী হবে না।’ 

৮. ঘর বা অন্যত্র বাদ্যযন্ত্র না রাখা : ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আন্হু) বলেন,

الْغِنَاءُ يُنْبِتُ النِّفَاقَ فِيْ الْقَلْبِ، كَمَا يُنْبِتُ الْمَاءُ الْبَقْلَ.

‘গান-বাজনা অন্তরে নিফাক্বী সৃষ্টি করে যেমন পানি সবজি উৎপাদন করে।’

৯. গৃহে স্বর্ণ-রূপার থালা ব্যবহার না করা : এ জাতীয় কোন কিছু ব্যবহার করা মুসলমানের জন্য বৈধ নয়। রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন :

الَّذِىْ يَشْرَبُ فِىْ إِنَاءِ الْفِضَّةِ إِنَّمَا يُجَرْجِرُ فِىْ بَطْنِهِ نَارَ جَهَنَّمَ.

যে ব্যক্তি রৌপ্যের পাত্রে পান করে সে তো তার উদরে জাহান্নামের অগ্নি প্রবিষ্ট করায়। 

১০. মেহমানদারীর জন্য বাড়ীতে আবশ্যকীয় জিনিস রাখা : রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

فِرَاشٌ لِلرَّجُلِ وَفِرَاشٌ لإِمْرَأَتِهِ وَالثَّالِثُ لِلضَّيْفِ وَالرَّابِعُ لِلشَّيْطَانِ.

একটি শয্যা পুরুষের, দ্বিতীয় শয্যা তার স্ত্রীর, তৃতীয়টি অতিথির জন্য আর চতুর্থটি (যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়) শয়ত্বানের জন্য। 

১১. পানাহারে অপচয় থেকে বেঁচে থাকা : অপচয় ও অপব্যয় নিষিদ্ধ। আল্লাহ তা‘আলা বলেনÑ

﴿وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا وَلَا تُسْرِفُوْا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ﴾

“তোমরা খাও ও পান করো। কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালবাসেন না।” 

১২. বাড়ী নির্মাণে প্রতিযোগিতা পরিহার করা : বাড়ী-ঘর, অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা না করা। জিবরীল (‘আলাইহিস্ সালাম) ক্বিয়ামতের আলামত সম্পর্কে প্রশ্ন করলে রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

أَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُوْنَ فِىْ الْبُنْيَانِ.

দাসী তার মনিবকে জন্ম দেবে (অর্থাৎ- সন্তান তার মায়ের নাফরমানী করবে); আর তুমি দেখবে যে, খালি পা ও খালি গায়ের অধিকারী মুখাপেক্ষী রাখাল সম্প্রদায়ের লোকেরা উঁচু-উঁচু প্রাসাদ তৈরী করে গর্ব প্রকাশ করবে। 

১৩. ঘরে কুরআন তিলাওয়াতের ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া : রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,

لَا تَجْعَلُوْا بُيُوْتَكُمْ مَقَابِرَ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنَ الْبَيْتِ الَّذِىْ تُقْرَأُ فِيْهِ سُوْرَةُ الْبَقَرَةِ.

‘তোমাদের ঘরকে কবর বানিয়ে নিয়ো না। অবশ্যই শয়ত্বান সেই ঘর হতে পলায়ন করে যে ঘরে সূরা আল বাক্বারাহ্ পাঠ করা হয়।’ 

১৪. ঘরে পরপুরুষ ও নারীতে নির্জনে অবস্থান না করা : ঘরে নির্জনে পরপরুষ ও পরনারীতে একত্রে অবস্থান করা নিষিদ্ধ। রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন :

لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ إِلَّا كَانَ ثَالِثَهُمَا الشَّيْطَانُ.

‘একজন স্ত্রীলোকের সাথে একজন পুরুষ একাকী থাকলে তাদের মধ্যে শয়ত্বান তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে যোগ দেয়।’ 

১৫. ঘর প্রশস্ত করা : রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

أَرْبَعٌ مِنَ السَّعَادَةِ : الْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ، وَالْمَسْكَنُ الْوَاسِعُ، وَالْجَارُ الصَّالِحُ، وَالْمَرْكَبُ الْهَنِيْءُ.

‘সৌভাগ্যের বিষয় চারটি; সতী-সাধবী স্ত্রী, প্রশস্ত বাড়ী, সৎকর্মশীল প্রতিবেশী ও আরামদায়ক বাহন।’

১৬. শয্যা গ্রহণের সময় দরজা বন্ধ করা, আগুন নিভানো ও খাবার পাত্র ঢেকে রাখা।

১৭. বাড়ীকে মহান আল্লাহর যিক্রের স্থানে পরিণত করা : রাসূল (সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

مَثَلُ الْبَيْتِ الَّذِىْ يُذْكَرُ اللهُ فِيْهِ وَالْبَيْتِ الَّذِىْ لَا يُذْكَرُ اللهُ فِيْهِ مَثَلُ الْحَىِّ وَالْمَيِّتِ.

‘যে ঘরে মহান আল্লাহকে স্মরণ করা হয় আর যে ঘরে মহান আল্লাহকে স্মরণ করা হয় না এরূপ দু’টি ঘরের তুলনা হচ্ছে জীবিত ও মৃতের সঙ্গে।’ 

পরিশেষেÑ দুনিয়াবী জীবনে বসবাসের জন্য বাড়ী-ঘর এক গুরুত্বপূর্ণ নি‘আমত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَاللهُ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ بُيُوْتِكُمْ سَكَنًا﴾

“আর আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের গৃহকে করেছেন আবাসস্থল।” 

আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলের বাড়ী-ঘরকে ইসলামী বৈশিষ্ট্যের অনন্যতায় ভরপুর করে দিন Ñআমীন। ###



  সহীহুল বুখারী- হাঃ ৩১১৬।

  সহীহুল বুখারী- ৩১১৬।

 আলোচক : বিটিভি ও এশিয়ান টিভি।

  সহীহ মুসলিম- হাঃ ১০৩/২০১৮।

  সূরা আন্ নূর- ৬১।

  সূরা আন্ নূর- ২৭।

  সহীহুল বুখারী- হাঃ ৭৩৮১।

  সহীহুল বুখারী- হাঃ ৬১১৩।

  সহীহুল বুখারী- হাঃ ৫৯৪৯।

  সহীহুল বুখারী- হাঃ ৫৯৪৯।

  সহীহুল বুখারী- হাঃ ২৩২২।

  সহীহুল বুখারী- হাঃ ৫৯৫২।

  সুনান আবূ দাঊদ- হাঃ ৪১২৯, সহীহ।

সহীহুল বুখারী- হাঃ ৫৬৩৪।

  সহীহ মুসলিম- হাঃ ৪১/২০৮৪।

  সূরা আল আ‘রাফ- ৩১।

  সুনান আত্ তিরমিযী- হাঃ ২৬১০।

  সহীহ মুসলিম- হাঃ ২১২/৭৮০।

  সুনান আত্ তিরমিযী- হাঃ ২১৬৫, সহীহ।

  সহীহ মুসলিম- হাঃ ২১১/৭৭৯।

  সূরা আন্ নাহ্ল- ৮০।



আপনার মন্তব্য1

ঢাকায় সূর্যোদয় : 6:17:45 সূর্যাস্ত : 5:11:51

সাপ্তাহিক আরাফাতকে অনুসরণ করুন

@সাপ্তাহিক আরাফাত